ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

স্বামীর ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যু’ দাবি করেও ধরা খেলেন স্ত্রী

২০২৫ জুলাই ৩০ ১৬:০৯:২৭
স্বামীর ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যু’ দাবি করেও ধরা খেলেন স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বামীকে হত্যার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া মমতা পাঠক নামের একজন প্রাক্তন রসায়নের অধ্যাপক নিজেই নিজের আইনজীবী হয়ে আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় স্বামীর মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে প্রমাণের চেষ্টা করলেও, শেষ পর্যন্ত তিনি সাজা থেকে রেহাই পাননি। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তার যাবজ্জীবন সাজা বহাল রেখেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, নিজের মামলার আপিলে মমতা পাঠক নিজেই আইনি লড়াই করেন এবং তার সাহসী যুক্তি ও আত্মবিশ্বাস ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। তবে আদালত মামলার প্রমাণ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে জেলা আদালতের রায়ই বহাল রাখে।

মমতা পাঠক মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলার একটি কলেজে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০২১ সালে তার স্বামী, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. নীরজ পাঠক, নিজ বাড়িতে রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।প্রথমে পুলিশ এটিকে ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু’ হিসেবে নথিভুক্ত করে। তবে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় বিষয়টি হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।

২০২২ সালে জেলা আদালত মমতা পাঠককে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে তিনি জব্বলপুর বেঞ্চে আপিল করেন।

আইনি সহায়তা না পেয়ে আদালতে নিজেই সওয়াল করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘তাপজনিত দাহ’ ও ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দাহ’ দেখতে অনেকটাই একরকম, এবং এদের পার্থক্য করতে রাসায়নিক বিশ্লেষণ প্রয়োজন।’

তার যুক্তিতে বিস্মিত হয়ে বিচারপতি জানতে চান, "আপনি কি রসায়নের অধ্যাপক?" উত্তরে মমতা বলেন, "জি, আমি একজন অধ্যাপক।"

তার আত্মবিশ্বাস, যুক্তির গঠন এবং নিজের পক্ষে দাঁড়িয়ে সাহসিকতা প্রদর্শন—সব মিলিয়ে আদালতের ওই মুহূর্তটি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই তার পক্ষে সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

তবে আদালত জানায়, সামাজিক সহানুভূতি বা ভাইরাল উপস্থিতি বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে না। উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ ও মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী মমতার দোষ প্রমাণিত হয়েছে।

সরকারি আইনজীবী মানস মণি বর্মা জানান, আদালতের পক্ষ থেকে প্রবীণ আইনজীবী সুরেন্দ্র সিংকে অ্যামিকাস কিউরি (বিচার সহায়ক) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল যাতে মমতা সুবিচার পান।

শেষে বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, ‘এটি একটি গুরুতর অপরাধ, যা সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি রাখে।’ সেই সঙ্গে মমতা পাঠককে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে