ঢাকা, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
Sharenews24

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পর তুরস্কের সতর্কবার্তা

২০২৫ জুন ২৮ ১২:১৮:৩৪
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পর তুরস্কের সতর্কবার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান শুক্রবার জানান, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে চলমান নিরবতা দীর্ঘস্থায়ী করতে একটি চুক্তি অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে তুরস্ক এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত রয়েছে।

এক সরাসরি টেলিভিশন সম্প্রচারে ফিদান বলেন, “বর্তমানে একটি শান্ত সময় চলছে, তবে এটি স্থায়ী করতে হলে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সমঝোতা প্রয়োজন।”

ফিদান জানান, ডাচ হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোয়ান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। বৈঠকে গাজা ইস্যু, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এবং ইরান সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যা ফলপ্রসূ ছিল।

তিনি আরও জানান, ন্যাটো সদস্যরা আগামী ১০ বছরে প্রতিরক্ষা খরচ ৫% বৃদ্ধি করার বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে। এর মধ্যে ৩.৫% বরাদ্দ থাকবে সামরিক প্রতিরক্ষা খাতে এবং ১.৫% বরাদ্দ হবে সাইবার সুরক্ষা ও শিল্প সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।

গাজা ইস্যুর প্রথম সপ্তাহেই ফিদান বলেছিলেন যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। ইসরায়েলের হামলা ইরানকে আত্মরক্ষায় বাধ্য করেছে। এতে দেখা গেছে, ইসরায়েলের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করার মতো শক্তি আসলে সীমিত।

তিনি জানান, যুদ্ধ ১২ দিনের মধ্যে থেমে গেলেও এটি একটি সাময়িক বিরতি মাত্র। পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়েছে এমন ধারণার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধবিরতি হয়েছে, কিন্তু অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা এখনও আছে। তাই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি জরুরি।

ফিদান বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ভবিষ্যতের আলোচনায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র কী এজেন্ডা নিয়ে বসবে — শুধুমাত্র পারমাণবিক ইস্যু নাকি অন্য বিষয়গুলোও। তিনি মনে করেন পারমাণবিক ইস্যুতে সমঝোতার সম্ভাবনা আছে, যেমনটি ওবামা সরকারের সময় হয়েছিল।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইরান এমন কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করবে না যেখানে শুধু পারমাণবিক সক্ষমতা নয়, অন্যান্য সক্ষমতাও ছাড়তে হবে।

ফিদান নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলের হামলার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। মার্কিন পক্ষ জানিয়েছে তারা হামলায় জড়িত নয় এবং চায় না ইরান তাদের লক্ষ্য করুক। তবে যদি আক্রমণ হয়, যুক্তরাষ্ট্র ‘কঠোর জবাব’ দেবে।

তারপর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকেও জানিয়েছে, তারা যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকতে চায় এবং যুদ্ধে জড়াতে চায় না।

ফিদান বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এসেছে, যদিও সে বিষয়ে বিস্তারিত তিনি জানাননি। তিনি আবারো উল্লেখ করেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা শুরু হলে তুরস্ক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।

যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরানে কোনো ধরনের পারমাণবিক সমৃদ্ধি না হোক, কিন্তু ইরান বলছে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি অর্জন তাদের আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার।

ফিদান বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা আছে তা মূলত পাঁচটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সম্মতিতে এসেছে। অথচ ওই দেশগুলো নিজেই অস্ত্র রাখছে, অন্যদের ঠেকাতে একমত হলেও নিজেদের অস্ত্র সংগ্রহ অব্যাহত রেখেছে। শেষ পর্যন্ত “কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না,” মন্তব্য করেন তিনি।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে