ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বিএনপি’র ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের বড় ঘোষণা

২০২৫ জানুয়ারি ২৯ ১২:৩৮:৪২
বিএনপি’র ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে শীর্ষ নেতাদের বড় ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি শিগগিরই ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরবে। এই লক্ষ্যে দলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনার জন্য একটি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে দলের অবস্থান চূড়ান্ত করা হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এছাড়া, বিএনপি গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবে, যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি গ্রহণযোগ্য ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা যায়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে ঘোষণাপত্রের বিষয়টি নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিছু সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র প্রণয়নের কাজ চলছে, এবং ছাত্রদের পাঠানো খসড়া নিয়ে দলের আলোচনাও চলছে। এই খসড়া ঘোষণাপত্রে কিছু পরিমার্জন এবং পরিবর্ধন আনার পরিকল্পনা রয়েছে, পাশাপাশি নিজেদের বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করাও আলোচনার মধ্যে রয়েছে।

বিএনপি জানায়, তারা ছাত্রদের উদ্যোগ সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে চায় না, তবে তারা এটি পূর্ণাঙ্গ রূপে উপস্থাপন করতে চায়, যাতে আইনি এবং সাংবিধানিক দিক বিবেচনায় রেখে এটি সঠিকভাবে তৈরি হয়। তাদের মতে, ছাত্রদের পক্ষ থেকে বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাতিল করার যে দাবি উঠেছে, তা যুক্তিসঙ্গত নয়। তারা মনে করে, মুক্তিযুদ্ধই বাংলাদেশের ভিত্তি, এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো বিকৃতি বরদাস্ত করা যাবে না।

এদিকে, ৫ আগস্টের পর গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের প্রস্তাবিত খসড়া ঘোষণাপত্রে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হওয়ার যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। দলের মতে, এটি অপ্রয়োজনীয় এবং ডিক্লারেশন আকারে ঘোষণা করা উচিত।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান সংবাদমাধ্যমে বলেন, তারা কোনো ইতিহাসকে অস্বীকার করছেন না এবং অতীতে আওয়ামী লীগ যেভাবে ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তা হবে না। বিএনপি চায়, স্বাধীনতার পরবর্তী লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস সঠিকভাবে লেখা হোক, এবং তা সংগ্রামের অংশীদার সকলকে সম্মান জানানো হোক।

দলটির আরেক সদস্য বলেন, বিএনপি ছাত্রদের আন্দোলনকে সমর্থন করছে, তবে দলটি মনে করে যে, ৩৬ দিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতন হয়নি। বিএনপির নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে, এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানেও দলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। এ কারণে, জুলাই ঘোষণাপত্রে এই ঘটনাগুলোর স্বীকৃতি থাকা উচিত।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার পর যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করা হবে, যাতে এটি সর্বজনীন এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, জাতির সামনে একটি ঐকমত্য ভিত্তিক বয়ান উপস্থাপন করার জন্য সব দলের মতামত গুরুত্ব পাবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ক্ষেত্রে ছাত্রদের বক্তব্যে কিছু সন্দেহ তৈরি হয়েছিল, কিন্তু তাদের এখনকার অবস্থান আগের মতো নেই। তাদের দাবি, শুধু ৩৬ দিনের আন্দোলন নয়, দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসকে সম্মান জানাতে হবে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে