ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

ট্রান্সকমের দুই বোনের লড়াই, তিন মামলায় মা-সহ ৬ আসামী

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ২৪ ০৭:০৩:৩৭
ট্রান্সকমের দুই বোনের লড়াই, তিন মামলায় মা-সহ ৬ আসামী

ট্রান্সকমের দুই বোনের লড়াই : সিইও সিমিন ও মা শাহনাজের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন শাযরেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শাযরেহ হক রাজধানীর গুলশান থানায় তার বড় বোন ও মাসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, বঞ্চিত করা ও জালিয়াতির তিনটি মামলা মামলা দায়ের করেছেন।

শাযরেহের বড় বোন সিমিন রহমান ট্রান্সকমের বর্তমান সিইও। তার মা শাহনাজ রহমান গ্রুপটির বর্তমান চেয়ারম্যান। দুটি মামলায় শাহনাজের নাম রয়েছে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দায়ের করা মামলা তিনটির বিস্তারিত বিবরণে দেখা যায়-

অর্থ আত্মসাৎ

মামলার নথিতে শাযরেহ লিখেছেন, তার বাবা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রেখে মারা যান। ওই অর্থের নমিনি ছিলেন তার মা শাহনাজ রহমান।

শাযরেহ অভিযোগ করেছেন, ২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমান মারা যাওয়ার পর ওই টাকা তার উত্তরাধিকারীদের (ওয়ারিশ) মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর পর তার বড় বোন (সিমিন) সব টাকা নিজের ও তার মায়ের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলেন বলে মামলার এজাহারে দাবি করেছেন শাযরেহ।

শাযরেহ আরও দাবি করেছেন, ২০২০ সালের ৩ আগস্ট তার বড় বোন ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্সের ১৮ শতাংশ শেয়ার উক্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকা থেকে ৬০ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেওয়ার বাহানায় নিজের নামে হস্তান্তর করেন।

শাযরেহ দাবি করেছেন, তার বোন ও মা পরস্পরের যোগসাজশে লতিফুরের অন্যান্য উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করে এই কাজ করেছেন।

ট্রান্সকমের শেয়ার থেকে উত্তরাধিকারী বঞ্চিত

আরেক মামলায় শাযরেহ দাবি করেছেন, তার বোন ট্রান্সকমের আরও চার কর্মকর্তার সহযোগিতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তিনটি ফর্ম ১১৭ (হস্তান্তর দলিল) তৈরি করে রেজিস্ট্রার অভ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসি) জমা দিয়ে বেআইনিভাবে ট্রান্সকমের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিকানা নিয়ে নেন।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বাদীকে জানানো হয়েছিল যে তার পিতা তাকে ৪ হাজার ২৭০টি শেয়ার, তার ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে ৪ হাজার ২৭০টি শেয়ার এবং তার বোনকে ১৪ হাজার ১৬০টি শেয়ার হস্তান্তর করেছেন।

কিন্তু বাদী কখনোই হস্তান্তর দলিলে (ফর্ম ১১৭) স্বাক্ষর করেননি বলে দাবি করেছেন। তার বাবাও জীবিতাবস্থায় কখনও হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেননি বলে দাবি করেছেন বাদী শাযরেহ হক। আসামিরা এসব নথি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

ডিড অভ সেটেলমেন্ট (মীমাংসার দলিল) জালিয়াতি

আরেকটি মামলায় শাযরেহ দাবি করেছেন, তার মা ও বোন ট্রান্সকমের অন্য তিন কর্মকর্তার সহযোগিতায় তার [শাযরেহ] এবং তার ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ডিড অভ সেটেলমেন্ট (মীমাংসার দলিল) তৈরি করেছেন।

শাযরেহ দাবি করেছেন, পরে ওই ডিড অভ সেটেলমেন্ট ব্যবহার করে সিমিন ও শাহনাজ ট্রান্সকম গ্রুপের শেয়ার নিজেদের নামে হস্তগত করাসহ গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইওর পদ নিজেদের নামে করে নিয়েছেন।

শাযরেহ দাবি করেছেন, তিনি কখনও তার পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে ডিড অভ সেটেলমেন্ট করেননি।

উল্লেখ্য, শাযরেহ করা তিন মামলায় দণ্ডবিধির যেসব ধারা উল্লেখ করা হয়েছে, তা হলো বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৪০৬, ৪১৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭০ ও ৪৭১।

৪০৬ নং ধারাটি বিশ্বাসের ফৌজদারি লঙ্ঘন; এ অপরাধের শাস্তি তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা অথবা উভয়ই। শাযরেহ হক তার মা ও বোন দুজনকেই এ অভিযোগে অভিযুক্ত কছেরেন।

শাযরেহ তার মা ও বোনের বিরুদ্ধে প্রতারণা (৪১৯); মূল্যবান জামানত, উইল ইত্যাদি জালিয়াতির জন্য জাল সীলমোহর তৈরি (৪৬৭); প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি (৪৬৮), জাল দলিল (৪৭০) এবং জাল দলিলকে খাঁটি দলিলরূপে ব্যবহার (৪৭১) ব্যবহার করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

শেয়ারনিউজ, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে