ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

প্রেমের টানে ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বিসর্জন

২০২৩ আগস্ট ১৪ ১২:১৪:৪৫
প্রেমের টানে ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বিসর্জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভালোবাসার মানুষকে নিজের করে পেতে মানুষ কত কিছুই করে। কিছু দিন পরপরই শোনা যায়, অমুক গ্রামের অমুক যুবকের প্রেমের টানে বাংলাদেশে বিদেশি কন্যার আগমন। অবশ্য সেসব নারীর সম্পত্তি, নিজের দেশের মায়া বিসর্জন দিয়ে আজীবনের জন্য চলে আসতে হয় না।

সিনেমায় সহায়-সম্বলহীন যুবকের প্রেমে ধনকুবেরের কন্যার পৈতৃক বিলাসী জীবন ত্যাগের ঘটনা অহরহ দেখা যায়। এ দৃশ্য এত বেশি পরিমাণে চিত্রায়ণ হয়েছে যে, আমাদের মধ্যে এ কাহিনী হাস্যরসের জন্ম দেয়।

কিন্তু বাস্তবেও এমনটি ঘটেছে। ১৫ বছর আগে মালয়েশিয়ার ধনকুবের খু কায় পেংয়ের মেয়ে অ্যাঞ্জেলিন ফ্রান্সিস খু ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার পারিবারিক সম্পত্তির মায়া ছেড়ে বাবার অমতে প্রেমিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে তিনি ওই সবকিছু বিসর্জন দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি পত্রিকার বিচারে ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার প্রথম ৫০ জন ধনকুবেরের তালিকায় অন্যতম ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনের বাবা পেং। তার পূর্বপুরুষরা চিন ছেড়ে সে দেশে বসতি গড়েছিলেন। মালয়েশিয়ায় একটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা করা থেকে শুরু করে ‘লরা অ্যাশলি’ নামে ব্রিটেনের একটি নামজাদা ফ্যাশন, ফার্নিশিং এবং টেক্সটাইল ডিজাইন সংস্থায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন পেং। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওই পত্রিকাটি জানিয়েছিল, ওই ব্রিটিশ সংস্থায় ৪৪ শতাংশ শেয়ারও রয়েছে তার।

সে সময় এমইউআই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা পেংয়ের সম্পত্তির পরিমাণ ২ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে জ্যেষ্ঠ ছেলে অ্যান্ড্রুর হাতে এমইউআই গোষ্ঠীর দায়িত্ব ছেড়ে অবসর নেন পেং। অ্যাঞ্জেলিনের মা পলিন চাইও ছিলেন মডেল। মালয়েশিয়ার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা ‘মিস মালয়েশিয়া’র শিরোপা জিতেন তিনি। এ দম্পতির তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় ক্যারিবীয় সহপাঠী জেডিডিয়া ফ্রান্সিসের সঙ্গে পরিচয় হয় অ্যাঞ্জেলিনের। একপর্যায়ে সহপাঠীর প্রেমে পড়েন ধনকুবেরের মেয়ে। প্রেমিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার ইচ্ছে অ্যাঞ্জেলিন বাবাকে জানান। কিন্তু বাবা পেং তাদের বিয়েতে রাজি ছিলেন না। ২০০৮ সালে বিয়ে নিয়ে এ মতবিরোধের জেরে ঘর ছাড়েন অ্যাঞ্জেলিন। বাবার অমতে বিয়ে করলে যে তাকে হারাতে হবে বিপুল সম্পত্তি। এ ছাড়া পারিবারিক সম্পর্কও থাকবে না। এত কিছু জেনেও অ্যাঞ্জেলিন প্রেমিককেই বেছে নেন।

এক সাক্ষাৎকারে অ্যাঞ্জেলিন বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, আমাদের বিয়ে নিয়ে বাবার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তাই কোনটা ঠিক, তা বুঝতে বেগ পেতে হয়নি।’ সম্পত্তি ছেড়ে আসায় আফসোস প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘বিত্তশালী হওয়াটা এক অর্থে আশীর্বাদ বটে। অর্থের বিনিময়ে অনেক কিছু করা যায়, বহু পথ খুলে যায়। তবে সেই সঙ্গে কিছু উপরি দিক থাকে। যেগুলোর মধ্যে একটি হলো ক্ষমতার দখলদারি। আর্থিক ক্ষমতা থাকলে বহু ক্ষতিকারক বৈশিষ্ট্য ফুলে-ফেঁপে ওঠে। তাতে নানা সমস্যা শুরু হতে পারে। আমি সৌভাগ্যবতী যে আমার এ ধরনের মানসিকতা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আসলে সব ছেড়েছুড়ে বেরিয়ে আসাটা খুব সহজ। ওই সব নিয়ে কখনও বিশেষ চিন্তাভাবনা করিনি।’ তবে পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হলেও অ্যাঞ্জেলিন আর্থিক সংকটে রয়েছেন এমনটা নয়। তিনি পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। অপরদিকে ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন জেডিডিয়া। এ দম্পতি বর্তমানে ভালোই আছেন বলে জানা গেছে। নিজের সিদ্ধান্ত নিয়েও হতাশ নন অ্যাঞ্জেলিন।

শেয়ারনিউজ, ১৪ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে