ঢাকা, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
Sharenews24

সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ঘোর সংকট

২০২৫ জুন ২১ ১৪:১৩:০৬
সাত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ঘোর সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে চলমান পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই টানা দরপতনের ফলে অনেকে তাদের সব পুঁজি হারিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। যারা এখনও বাজারে টিকে আছেন, তাদের অধিকাংশই বড় লোকসানের বোঝা নিয়ে ধুঁকছেন।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক মাসে সাতটি কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা এমন এক ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন, যেখানে তাদের বিনিয়োগের ১৮ শতাংশ থেকে প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২৪ শতাংশ) পুঁজি উধাও হয়ে গেছে।

এই সাতটি কোম্পানির মধ্যে উত্তরা ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম কমেছে ২৩.৮৫ শতাংশ, যা বিনিয়োগকারীদের সঞ্চয়ের একটি বিশাল অংশ গিলে খেয়েছে। দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দরপতনের হার ছিল ১৯.৫৩ শতাংশ, যা ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য এক বড় ধাক্কা। বে-লিজিংয়ের শেয়ার মূল্য কমেছে ১৮.৮৭ শতাংশ, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।

এদিকে, ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ১৮.৬৯ শতাংশ এবং এনআরবিসি ব্যাংক ১৮.৬৭ শতাংশ দরপতনের শিকার হয়েছে, যা ব্যাংক খাতের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও হতাশা ছড়িয়ে দিয়েছে। একইভাবে, ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারের দাম ১৮.৪৮ শতাংশ কমেছে এবং ইসলামী ফাইন্যান্সের বিনিয়োগকারীরা ১৭.৭৮ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন।

এই পরিসংখ্যানগুলো কেবল সংখ্যা নয়, এগুলো হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর মুখের হাসি কেড়ে নেওয়া এবং তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার করুণ চিত্র। যারা স্বল্প বা মধ্যমেয়াদী লাভের আশায় পুঁজিবাজারে এসেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছেন।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা, যারা অনেক আশা নিয়ে সামান্য সঞ্চয় বাজারে খাটিয়েছিলেন, তাদের অনেকেরই এখন "খালি হাতে বাড়ি ফেরা" ছাড়া কোনো উপায় নেই। পুঁজি হারানোর এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে এবং নতুন করে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে তাদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে।

শেয়ারবাজারের এই অস্থিরতা শুধুমাত্র বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত ক্ষতি করছে না, এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাজারের প্রতি বাড়তে থাকা আস্থাহীনতা নতুন বিনিয়োগের পথ রুদ্ধ করছে, যা অর্থনীতির জন্য মারাত্মক এক প্রতিবন্ধকতা।

এই নাজুক পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের লোকসান কিছুটা হলেও পুষিয়ে দিতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা আবশ্যক। অন্যথায়, এই ক্ষতির বোঝা আরও অনেক বিনিয়োগকারীর কাঁধে চাপবে, যা দেশের আর্থিক খাতকে দুর্বল করে দেবে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলবে। বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে