ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

কারাগারে ‘ভিআইপি বন্দি’রা যা যা সুবিধা পাচ্ছেন

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৫:২৬:১৬
কারাগারে ‘ভিআইপি বন্দি’রা যা যা সুবিধা পাচ্ছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কিছু প্রভাবশালী এবং উচ্চপদস্থ রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রীদের কারাগারে কাটানো জীবনের এক বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরে। নিচে এর মূল বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:

সাবেক সংসদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, যিনি এক সময় বিলাসী জীবনযাপন করতেন, এখন ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট্ট একটি সেলে দিন কাটাচ্ছেন। তার সেলটি অত্যন্ত সাধারণ, যেখানে একটি চৌকি, কম্বল, বালিশ এবং মগ থালাবাটি ছাড়া কোনো বিলাসিতা নেই।এক সময় আমু নতুন টাকার বান্ডিল এবং সোনালি নৌকা উপহার পেতেন, কিন্তু বর্তমানে তার সময় কাটে মাদক মামলার আসামির সাথে কথা বলে। ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আমু গোপনে ছিলেন এবং পরে গ্রেপ্তার হন।

আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান, যিনি এখন কারাগারে ফ্লোরে ঘুমান, তার জীবন কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তার খাবার দুপুর ৪টায় আসে, তবে তা ৯টার মধ্যে অপর্যাপ্ত হয়ে যায়। তার সঙ্গে আরেকজন আসামি থাকেন এবং তাকে পরিবারের সাথে কথা বলতে দেওয়া হয় না।

সালমান এফ রহমানকে গত ২৭ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় এবং এখন তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

বিভিন্ন সাবেক মন্ত্রী, এমপি, এবং রাজনৈতিক নেতারা যারা কারাগারে আছেন, তাদের অনেকেই ‘ডিভিশনপ্রাপ্ত’ বন্দি হিসেবে বিশেষ সুবিধা পান। ডিভিশন পাওয়ার ফলে তাদের খাবারের মান উন্নত হয় এবং তাদের আলাদা সেল, বই, টিভি এবং ফোন ব্যবহারের সুবিধা থাকে।

তবে সাধারণ বন্দিরা তুলনামূলকভাবে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতে থাকেন, যেখানে তাদের একাধিক আসামি একসাথে সেলে থাকতে হয় এবং খাবারও নিম্নমানের থাকে।

আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৩৬ জন ‘ভিআইপি’ বন্দি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, সংস্কৃতি মন্ত্রী এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তবে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এখনও ডিভিশন পায়নি এবং সাধারণ বন্দির মতোই কঠোর শাস্তি ভোগ করছেন।

কারাগারের মধ্যে থাকা ‘ভিআইপি’ বন্দিরা বেশিরভাগ সময় বই পড়ে, টিভি দেখে অথবা আড্ডা দেয়। তাদের কিছু অংশ জগিং করতেও বের হয়। তারা নিজেদের জন্য একজন কয়েদি সহকারীও পেয়ে থাকেন, যারা তাদের সহায়তায় থাকে। তবে, সাধারণ বন্দিরা এসব সুবিধা পায় না, এবং তাদের জীবন অনেক বেশি কষ্টসাধ্য।

আরো কিছু বন্দির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা সাধারণ আসামির মতো কারাগারে আছেন। তাদের মধ্যে সাবেক এমপি, ব্যবসায়ী, পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা রয়েছেন। তাদের কারাগারের অবস্থা খুবই কঠিন, যেখানে খাবারের মান কম এবং জায়গাও ছোট।

সরকার এবং আইনব্যবস্থার প্রতি জনগণের ক্ষোভ এবং আক্রোশের প্রতিফলন। বিশেষত, ‘ভিআইপি’ বন্দিদের বিশেষ সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি জনমনে প্রশ্ন তুলেছে এবং এর ফলে কারাগারের মধ্যে সাধারণ বন্দিদের প্রতি বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সাধারণত ডিভিশন পেয়ে থাকেন, যার ফলে তাদের খাবারের মান এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নত থাকে। তবে, কিছু বন্দি ডিভিশন পাওয়ার পরও তাদের খাবারের মান সাধারণ বন্দির তুলনায় উন্নত হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের দিন কাটানো কষ্টকর হয়ে ওঠে।

আদনান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে