এক কোম্পানি খেলাপি হলেও ঋণ পাবে অন্য কোম্পানি : বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক : এখন থেকে কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলেও গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠান ঋণ নিতে পারবে। তবে ব্যাংক দেখবে প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃত খেলাপি, নাকি যৌক্তিক কারণে খেলাপি। এসব বিবেচনা করে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে।
গত বছরের জুলাই মাসে ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিবর্তন এনে ঋণখেলাপি গ্রাহকদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে, যেখানে নানা শর্ত দিয়ে তা অনুসরণ করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আগে এক প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ নেওয়ার সুযোগ ছিল না। এরপরও ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ লাগামছাড়া ভাবে বেড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত ১৫ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রায় সাড়ে ৬ গুণ হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আদালতে স্থগিত থাকা, অবলোপন করা ও পুনঃ তফসিলি করা ঋণসহ বিপর্যন্ত ঋণের মোট পরিমাণ প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা অবশ্য মনে করেন, খেলাপি গ্রাহকদের ভেতরে যারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি, নতুন ঋণ দেওয়ার সময় তাঁদের চিহ্নিত করাই হবে সবচেয়ে কঠিন কাজ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি চিহ্নিত করা কঠিন। শক্তিশালী গোষ্ঠীটি আইন পরিবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছে। এখন তারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি নয়—এটা প্রমাণ করে ঋণও বের করে ফেলবে। এর ফলে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানোর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা ম্লান হয়ে যাবে। গোষ্ঠীটির ক্ষমতার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সব ক্ষেত্রে। এতে আমানতকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।’
আইনে পরিবর্তনের নেপথ্য প্রেক্ষাপট
শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন ব্যাংক পরিচালক গত বছরের জুন মাসে সরকারের উচ্চপর্যায়ে একটি লিখিত প্রস্তাবে জানিয়েছিলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান খেলাপি হলে একই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠান যাতে ঋণসুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়। ওই প্রস্তাবে তাঁরা বলেছিলেন, ঋণ ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি না হলে বা যুক্তিসংগত কারণে ঋণখেলাপি হয়ে পড়লে সেই ঋণকে খেলাপি হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যাংকগুলো যেন ঋণ দেয়।
ব্যাংক পরিচালকেরা যখন এই প্রস্তাব জমা দেন, তখন সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় এমন কোনো ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আইনটি তখন অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে ছিল। ওই কমিটি সংসদে যে মতামত পেশ করে, তাতেও ব্যাংক পরিচালকদের প্রস্তাবটি স্থান পায়নি।
কিন্তু গত বছরের জুলাইয়ে আইনটি পাসের দিন সরকারি দলের সংসদ সদস্য, বর্তমানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম আইনে আরও সংশোধনের প্রস্তাব আনেন। তিনি যেভাবে ওই ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করেন, তা অনেকটা সরকারের উচ্চপর্যায়ে ব্যাংক পরিচালকদের দেওয়া প্রস্তাবের মতো ছিল।
এরপর আহসানুল হকের সংশোধনী প্রস্তাবসহ কণ্ঠভোটে পাস হয় ব্যাংক কোম্পানি আইন।
বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রজ্ঞাপনে যা বলা হলো
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো খেলাপি গ্রাহককে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনো ঋণ দিতে পারবে না। তবে এই আইনের অন্য ধারায় বলা হয়েছে, পরস্পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনো খেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি না হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কারণ আছে, তাহলে একই গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠান খেলাপি বলে গণ্য হবে না। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ঋণ দেওয়া যাবে।
এেই জন্য বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহক হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পর উক্ত তালিকার বিরুদ্ধে কোন ঋণগ্রহীতা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট আপিল করা হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠানের ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে তাদের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে আবেদন করতে হবে। ঋণসুবিধা প্রদানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নেওয়া সিদ্ধান্তের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করা আবেদনপত্রের সঙ্গে গ্রুপভুক্ত খেলাপি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির খেলাপি হওয়ার কারণ উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এই খেলাপি ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এ–সংক্রান্ত হালনাগাদ ঋণ তথ্য ব্যুরোর (সিআইবি) রিপোর্ট সংযুক্ত করতে হবে। সিআইবি রিপোর্টিংয়ে উক্ত খেলাপি ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা নন, এই মর্মে সংশ্লিষ্ট সব ঋণদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে জমা দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার আগে খেলাপি হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ, ঋণ আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব ও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং পরিদর্শন দলের বিবেচনায় প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি পর্যালোচনার লক্ষ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে। এর পরই ঋণ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদে আইন করে খেলাপিদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এটা আটকানোর ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই। এরপরও কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
শেয়ারনিউজ, ০৪ এপ্রিল ২০২৪
পাঠকের মতামত:
- বিএটিবি-এর মুনাফা ও ক্যাশ ফ্লোতে ব্যাপক ক্ষতি
- ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা ও গভর্নরকে আদালতে তলব
- সচিবরা আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান হতে পারবেন না
- ৯৮০ কোটি টাকায় বার্জারের নতুন কারখানা প্রকল্প
- ঢাকা ইন্সুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- কোহিনুর কেমিক্যালের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- নতুন উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে তথ্য দিলেন সেই ভুয়া এফবিআই কর্মকর্তা
- শিক্ষকদের ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
- ইসলামী ব্যাংকিংয়ে ‘মুনাফা’ এবং সাধারণ সুদের মধ্যে বড় পার্থক্য
- ১ লিটার দুধ ১৩ হাজার টাকা
- সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ না ছাড়ার নেপথ্যে
- জামায়াতকে একহাত নিলেন মির্জা ফখরুল
- চেক লেখার সময় এই ভুলটি করলেই শেষ
- রয়টার্সের ৩টি বড় ভুল ফাঁস করলেন উপ-প্রেস সচিব
- সরকারি কর্মকর্তাদের উপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা
- এসএমই খাতকে অর্থনীতির ‘ইঞ্জিন’ বানাতে সরকারের বড় উদ্যোগ
- নামাজে অজু ভেঙে গেলে করণীয়
- ভারতীয় পাসপোর্টের দুরবস্থা ফাঁস করল নতুন রিপোর্ট
- RSI বিশ্লেষণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ৬ শেয়ার
- ৩০ দিন ভাত-রুটি ছাড়লে শরীরে ঘটে ৭টি অবিশ্বাস্য পরিবর্তন
- ‘না ভোটে’ বিএনপি মুখ থুবড়ে পড়বে
- জাকির নায়েকের বাংলাদেশে আসা নিয়ে ভারতের কড়া বার্তা
- আজ থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে বড় পরিবর্তন
- ওরিয়ন ইনফিউশন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কৌতুহল
- ‘নো ডিভিডেন্ড’-এর শেয়ারের তেজ বেশি!
- লোকসান কাটিয়ে আয়ে ফিরছে আরএকে সিরামিকস
- ঋণচাহিদা কমলেও ছয় ব্যাংকের ব্যতিক্রমী মুনাফা
- মন্দার মধ্যেও সপ্তাহের শেষে সূচকে খানিকটা আলো
- শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ১৭ সংবাদ
- ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন মিনহাজ মান্নান
- ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- ঢাকায় জাকির নায়েক, ভারতের নজরে বাংলাদেশের ব্যবস্থা
- প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ঘোষণা
- পলাতক ডিআইজির বিষয়ে যা জানা গেল
- এক ক্লিকেই জেনে নিন আপনার ই-মেইল হ্যাক হয়েছে কিনা
- বিএনপি ও জামায়াত প্রসঙ্গে এনসিপি নেতার মন্তব্যে গুঞ্জন
- বিদেশে যেতে না পারার অভিজ্ঞতা শোনালেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
- প্রকাশ পেল কোটি টাকার নকল কয়েল সিন্ডিকেট
- সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- জিয়ার প্রতিচ্ছবি থেকে ড. ইউনূস এখন আইয়ুব-ইয়াহিয়া
- ডন ও সামিরাকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলো পুলিশ
- একনজরে দেখে নিন ৬ কোম্পানির ইপিএস
- একনজরে দেখে নিন ৮ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে
- এনসিপির দ্বন্দ্বে তাহসিনেশনের গান গেয়ে রিফাতের খোঁচা
- মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বিএমডিসি
- ওমরাহ ভিসার নতুন নিয়ম চালু করল সৌদি আরব
- যে কারণে ইসলামে নারী-পুরুষের বুদ্ধিমত্তা ভিন্ন
- এনসিপির শাপলা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল ইসি
- এক টাকার নিচে শেয়ারের জন্য নতুন নিয়ম আনল ডিএসই
- জানা গেলো পে স্কেল ঘোষণার সময়
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবরের বন্যা
- ডিএসইর দুই ব্রোকারেজের ট্রেডিং লাইসেন্স বাতিল
- ৩ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- হিরোশিমার চেয়ে ৫০০ গুণ শক্তিশালী গ্রহাণু বাংলাদেশের দিকে
- বিকালে আসছে ৩২ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- দেখে নিন ২০ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- ৪০ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- আবারো ভাঙা হবে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে
- কলকাতায় মেসির থালায় যা যা থাকবে দেখে নিন একনজরে
- মার্জিন ঋণ পরিবর্তনের খবরে ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- জেএমআই হসপিটালের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসেও থামছে না পাঁচ ব্যাংকের পতন














