ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

আইএফআইসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গভর্নরের কাছে অভিযোগ

২০২৪ নভেম্বর ০৫ ১৬:০৫:১৫
আইএফআইসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গভর্নরের কাছে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়েগ দেওয়া হয় মো. মেহমুদ হোসেনকে। কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই নিয়মের বাহিরে যেয়ে ব্যাংকটির দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপসহ শাখা-উপশাখা পর্যায়ে অনলাইনে সভা করছেন। এমন আরো অনিয়মের বিষয়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের কাছে।

জানা যায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অভিযোগ দেন গভর্নরের কাছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মো. মেহমুদ হোসেন। তবে তিনি দায়িত্ব নিয়েই ব্যাংকটির স্বাভাবিক পরিচালনা কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ শুরু করেছেন। এর মধ্যে গত ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের সব শাখায় চেয়ারম্যানের বাণী ও ছবি টাঙাতে হবে বলে বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছেন। ব্যাংকের কমিউনিকেশন অ্যান্ড ব্রান্ডিং বিভাগ থেকে সব শাখার ম্যানেজারদের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা ও বাণী মেইল করা হয়েছে, যার ফলে সরাসরি ব্যাংক কোম্পানি আইনের লঙ্ঘন করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান নিয়মিত ১০টা-৫টা অফিস করার সময় শীর্ষ ম্যানেজমেন্টকে বারবার ডেকে পাঠান এবং তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পর্ষদ কর্তৃক গঠিত কোনো কমিটির চেয়ারম্যান বা কোনো পরিচালক এককভাবে/ব্যক্তিগতভাবে কোনো নীতিনির্ধারণী বা নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের এখতিয়ার রাখেন না বিধায় তিনি ব্যাংকের প্রশাসনিক বা পরিচালনাগত দৈনন্দিন কাজে অংশগ্রহণ বা হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।

এছাড়া গত ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি দেশের সব ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তার সঙ্গে অনলাইনে মিটিং করেছেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি প্রজ্ঞাপন নং- ৪৩ এর পরিপন্থি। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ও হাইব্রিড পদ্ধতিতে সভা আয়োজন করা যাবে না।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রমোশন স্থগিত ও চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে তিনি ইঙ্গিত প্রদান করেন, যা ব্যাংকের সব কর্মকর্তার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এমন পরিস্থিতে ব্যাংকের কর্মকর্তারা মারাত্মকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এখন থেকে সব প্রমোশন ও ট্রান্সফার বোর্ড দেখবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আইএফআইসির বড় বড় ঋণগ্রহীতাকে অফিসে ডেকে এনে মিটিং করছেন। আবার সাবেক এমডি ও উপদেষ্টা শাহ আলম সারোয়ারের পরামর্শে দুর্নীতিবাজ অফিসারদের বিভিন্ন পদে নতুন করে পদায়ন করছেন নতুন চেয়ারম্যান। আবার গত ২২ সেপ্টেম্বর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে ব্যাংক উদ্যোক্তা পরিচালকদের কোনো গুরুত্ব নেই বলে মন্তব্য করেন, যা ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকিং ক্যারিয়ারেও মো. মেহমুদ হোসেনের রেকর্ড খুব উজ্জ্বল নয়। বরং বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যেমন প্রাইম ব্যাংক থেকে ব্যাংক এশিয়ায় এমডি হিসেবে আসার পর প্রাইম ব্যাংকের মেরিনা এশিয়া, এটলাস গ্রীনপেক, স্ক্যানডেক্স, এমারেল্ড অয়েল ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ঋণ টেকওভার করেছিলেন মেহমুদ হোসেন। এসব ঋণ টেকওভারে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ব্যাংক এশিয়ার বোর্ড তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল।

এস/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে