ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ইসলামী ব্যাংকের পদস্থ কর্মকর্তারাই এস আলমের লুটের সহযোগী

২০২৪ অক্টোবর ১৪ ১৭:২৩:০৪
ইসলামী ব্যাংকের পদস্থ কর্মকর্তারাই এস আলমের লুটের সহযোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বৃহৎ মূলধনী প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক যখন এস আলম দখল করেছিল তখন জামাত-শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে যাদের ইসলামী ব্যাংক থেকে ছাঁটাই করতে চেয়েছিলেন, পরে তাদের অনেকেই এস আলমের লুটের সহযোগী হন। এই তালিকায় আছেন ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ব্যাংক খাতের শীর্ষ লুটেরা এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা ইসলামী ব্যাংকের সবচেয়ে পুরনো কর্মীদের একজন। যিনি পরে এস আলমের অন্যতম সহচর হয়ে যান।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মনিরুল মাওলা এক সময় ছাত্রশিবির করতেন। পরিবারের সদস্যরাও জামায়াত মতাদর্শী। ২০১৮ সালে তিনি যখন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তখন রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে ছাঁটাই করতে চান এস আলম। তবে সে যাত্রায় টিকে যান মনিরুল মাওলা। হয়ে যান এস আলমের সহযোগী।

এরপর ২০২১ সালে পদোন্নতি পেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন মনিরুল মাওলা। তার সময়ে ইসলামী ব্যাংকে ঘটে ভয়ংকর নভেম্বর, রিজার্ভ কেলেংকারিসহ বহু লুটতরাজ। মনিরুল মাওলা এখনো ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শিখা হুসনে আরা এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা অপসারণ করা বা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া এবং কোনো কর্মকর্তা যদি জনস্বার্থ বিরোধী কোনো কাজ করেন তাহলে তাকে অপসারণ করার দায়িত্ব পর্ষদের উপর।’

এস আলমের লুটপাটের আরেক সহযোগি ব্যাংকটির সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার আলী। তিনি ১৯৯২ সালে ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কর্মী ২০১৮ সালে ছিলেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট। এস আলমের দলে ভিড়ে অল্প সময়ে দুটি পদোন্নতি বাগিয়ে হয়ে যান অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ইসলামী ব্যাংক এস আলমমুক্ত হলে অন্য কর্মীদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।

এর আগে ২০১৭ সালের পাঁচ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করেন এস আলম। ব্যাংকে কর্তৃত্ব বাড়াতে পুরোনোদের সরিয়ে নিজের পছন্দের কর্মী নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। এজন্য ২০১৮ সালে দেশের দুটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে ছাঁটাই করার জন্য পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার তালিকা তৈরি করেন। তবে ব্যাংক পরিচালনায় ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় সেই ছাঁটাই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেন এস আলম। এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ওই সময়ে এস আলমকে সাহায্য করেছে জামায়াতেরই অনেকগুলো লোক। তারা তাদের আদর্শের সাথে বেইমানি করেছে শুধু প্রমোশন পাওয়ার জন্য।’

গত সাত বছরে ইসলামী ব্যাংকে প্রায় দশ হাজার কর্মী নিয়োগ দিয়েছেন এস আলম। পুরনো এবং এস আলমের নিয়োগ দেয়া কর্মীদের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে তদন্ত করছে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। এজন্য তিনটি কমিটি কাজ করছে বলে ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

সালাউদ্দিন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে