ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ডিভিডেন্ড প্রতারণায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্দ, বিএসইসির কাছে তদন্তের দাবি

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১১ ০৬:২৯:২১
ডিভিডেন্ড প্রতারণায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্দ, বিএসইসির কাছে তদন্তের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোম্পানি দুটির প্রতারণার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে। কোম্পানি দুটি হলো-কনফিডেন্স সিমেন্ট ও ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড।

বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেছে, কোম্পানি দুটি মুনাফা ন্যায্য অধিকার বিনিয়োগকারীদের দিচ্ছে না। প্রতিবছরই কোম্পানি দুটি বড় মুনাফা দেখায়, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের মুনাফার প্রকৃত ভাগ দেয় না। যে কারণে সোমাবার চাঙ্গা বাজারেও কোম্পানি দুটির ডিভিডেন্ড ঘোষণার খবর আসার পর শেয়ার দামে মারাত্মক নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। এতে কোম্পানি দুটির বিনিয়োগকারীরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

কনফিডেন্স সিমেন্ট

৩০ জুন, ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে কনফিডেন্স সিমেন্ট শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৮ টাকা ৭৩ পয়সা। আলোচ্য অর্থবছরের বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ মাত্র ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

অর্থাৎ কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৮ টাকা ৭৩ পয়সা। বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মাত্র ১ টাকা বা ১২ শতাংশ।

আগের বছর কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ৩ টাকা ১৫ পয়সা। আর ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ৫ শতাংশ ক্যাশ ৫ শতাংশ বোনাস। অর্থাৎ আগের বছর মুনাফার ৩২ শতাংশের কম বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। সে বছরও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ন্যায্য অধিকার দেয়নি।

এদিকে, সমাপ্ত অর্থবছরে বড় মুনাফার মুলা ঝুলিয়ে কোম্পানিটি প্রিমিয়ামে রাইট শেয়ার ঘোষণা করেছে। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেছেন, ভুয়া মুনাফার মুলা ঝুলিয়ে বিনিয়োগকারীদের ফাঁদে ফেলতে কোম্পানিটি প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।

এই বিষয়ে ইসমাইল হোসেন নামের এক বিনিয়োগকারী শেয়ারনিউজকে বলেন, কোম্পানিটি আগের বছরও বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়েছে। আর এই বছর বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে রীতিমতো তামাশা করেছে।

তিনি বলেন, কোম্পানিটি এতো বড় মুনাফা করে বিনিয়োগকারীদের এতো কম ডিভিডেন্ড দিতে পারে না। তিনি বলেন, এটা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল। কারণ ডিভিডেন্ড কম দেওয়ার মানেই হলো ভুয়া মুনাফার ফুলঝুরি। প্রকৃত মুনাফা এর ধারেকাছেও নেই। যদি থাকতো, তাহলে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়ে বোনাস ডিভিডেন্ডের অর্থেই নতুন প্রকল্প করতে পারতো। রাইট শেয়ার ইস্যু করার কোন প্রয়োজনই হতো না। এতে বিনিয়োগকারীরাও নতুন প্যারায় পড়তো না।

ইসমাইল হোসেন বলেন, তিনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে কোম্পানিটির এই স্বেচ্চাচারিতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবেন। যাতে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড পুর্নবিবেচনা করার নির্দেশ দেন।

যদি বিএসইসি কোম্পানিটির এই স্বেচ্চাচারিতার বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে তিনি আদালতে যাবেন। কোম্পানিটির এই স্বেচ্চাচারিতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইস্টার্ন হাউজিং

সমাপ্ত ৩০ জুন, ২০২৪ অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৯ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ৪ পয়সা। এতে দেখা যায়, মুনাফার ৩২ শতাংশের কম অর্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। বাকি ৬৮ শতাংশ অর্থ কোম্পানি নিজের কাছে রেখে দেবে।

এর আগের বছরগুলোতেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা ৩০-৩২ শতাংশের বেশি দেয়নি। যে কারণে কোম্পানিটির রিজার্ভ প্রতিবছরই বড় আকারে বেড়েছে। যা কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের লুটপাটের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের কোন লাভ হয়নি।

আগের অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ি, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৯৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিপরীতে রিজার্ভে রয়েছে ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এরপরও মুনাফার সিংহভাগ রিজার্ভে রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আঙ্গুল তুলছেন। কোম্পানিটির পাহাড়সম রিজার্ভ রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে বিএসইসির কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে