ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ব্রিটেনে নতুন ভিসা সিস্টেমের পরিকল্পনা, বাংলাদেশিরা হতাশ

২০২৪ আগস্ট ২৯ ১২:২৯:০৩
ব্রিটেনে নতুন ভিসা সিস্টেমের পরিকল্পনা, বাংলাদেশিরা হতাশ

প্রবাস ডেস্ক: ব্রিটেনে লেবার সরকার ক্ষমতায় এলে অভিবাসন ব্যবস্থা সহজ হবে বলে অভিবাসী সম্প্রদায়ের বড় প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু লেবার অপেক্ষাকৃত অভিবাসীবান্ধব, দীর্ঘদিনের এই ধারণাটিকে ভুল প্রমাণ করে অভিবাসীদের জন্য দেশটিতে রীতিমতো নতুন ভিসা সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এতে দেশটিতে থাকা বৈধ কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশিদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।

লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যরা কম সংখ্যায় যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করছেন। কেননা, ইস্যুকৃত ভিসার সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের বেশি কমে গেছে। একজন ছাত্র বা অভিবাসী কর্মী হিসেবে ভিসা পাওয়া এখন অতী‌তের ম‌তো সহজ নয়।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর দক্ষ অভিবাসী কর্মীদের ভিসা দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে সরকার। গত বছর দক্ষ শিল্প শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০, যা চলতি বছর কমে ২ লাখ ৬২ হাজারে নেমে এসেছে। যুক্তরাজ্যে আসা ডিপেন্ডেন্ট বা নির্ভরশীলদের সংখ্যাও প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অভিবাসী কর্মীদের নির্ভরশীল‌দের সংখ্যা নেমে গেছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯০০ তে।

ব্রিটেনের রাজা চার্লস নতুন কর্মসংস্থান আইন এবং বিদেশী শ্রমিকদের উপর বক্তৃতায় ব্যবসায়ীদের বিদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের উপর নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এর পরিবর্তে সরকার স্থানীয় নাগরিকদের কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য স্থানীয় শ্রম ব্যবস্থার অংশ হিসাবে প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশের উপর জোর দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

যুক্তরাজ্যে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের বার্ষিক বেতনসীমা বাড়‌ছে। এমন প‌রি‌স্থি‌তি‌তে ব্রিটে‌নে বসবাসের আশায় ক‌রোনা মহামারীর পর বি‌ভিন্ন দেশ থে‌কে আসা ক‌য়েক লাখ অ‌ভিবাসীর জী‌বনে বড় ধর‌নের অনিশ্চয়তা নে‌মে আস‌তে পা‌রে। এসব অভিবাসীর মধ্যে কয়েক লাখই বাংলাদেশি।

উল্লেখ্য, বহু বছর ধ‌রে বসবাস ও কাজের বৈধতা ছাড়াই ব্রিটে‌নে পাঁচ লক্ষা‌ধিক মানুষ আনডকুমেন্টেড অবস্থায় বসবাস করছেন।

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব‌রিস জনসন লন্ডনের মেয়র থাকাকালীন ২০০৮ সালে কয়েক দফায় ব্রিটেনে বৈধ কাগজপত্র বিহীন অবস্থায় বসবাসরতদের বৈধতা দেবার আশ্বাস দেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দা‌য়িত্ব নেবার পরও সে প্রতিশ্রু‌তি পুর্নঃব‌্যক্ত করে‌ছিলেন তি‌নি।

তখন বরিস বলে‌ছি‌লেন, তার সরকার ব্রিটে‌নে অ‌বৈধ অভিবাসী‌দের বৈধতা দিতে দ্রুত পথ খুজ‌ঁবে। তবে সে ল‌ক্ষ্যে কার্যত কোনও পদ‌ক্ষেপই আর নেন‌নি ব‌রিস ও তার প‌রের তিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ব্রিটেনে বসবাস করছেন প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি। ব্রেক্সিট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের বৈধতার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, নতুন জনবল না এনে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যারা বসবাস ও কাজ করছেন তাদের বৈধ করে দিলে দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে। ব্রিটিশ অর্থনীতির মূল স্রোতে একীভূত করে সরকার তাদের কাজ থেকে কর আদায় করতে পারে।

এই বিষয়ে টাওয়ার হ‌্যাম‌লেটস কাউ‌ন্সি‌লের সা‌বেক ডেপু‌টি মেয়র অহিদ আহমদ ব‌লেন, ‘অবৈধ অ‌ভিবাসী‌দের বৈধতা তো দু‌রের কথা, বরং প্রতি‌দিন সরকা‌রের তরফে অভিবাসনবি‌রোধী কড়াক‌ড়ি আরো‌পের কথা বলা হ‌চ্ছে। কেয়ার ভিসাসহ বি‌ভিন্ন কা‌জের ভিসায় আসা হাজার হাজার মানুষ বেকার ও কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। সব মি‌লি‌য়ে গত এক দশ‌কের ম‌ধ্যে ব্রিটে‌নে সবচে‌য়ে বড় দুঃসময় পার কর‌ছেন ইমিগ্রান্টসহ সাধারণ মানুষ। আসিফ/

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে