ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

‘মালয়েশিয়ায় পাঠাতে কর্মী প্রতি দেড় লাখ টাকা নিয়েছে সিন্ডিকেট’

২০২৪ জুন ১২ ২১:০৮:৪৪
‘মালয়েশিয়ায় পাঠাতে কর্মী প্রতি দেড় লাখ টাকা নিয়েছে সিন্ডিকেট’

নিজস্ব প্রতিবেদক : মালয়েশিয়ায় পাঠাতে শ্রমিক প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা সিন্ডিকেটকে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বায়রার নেতারা।

তারা বলেন, এ কারণে সরকার নির্ধারিত ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা হলেও কর্মীদের পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কর্মীরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি পাননি।

বায়রার বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বর্জনকারী নেতারা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

এর আগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এজিএমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে হট্টগোল হয়। হেনস্তার অভিযোগ তুলে সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজ উল ইসলামের নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির ১০ নেতা এজিএম ওয়াক আউট করেন।

তারা আরেকটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, সিন্ডিকেটের মূল হোতা রুহুল আমিন স্বপনের নির্দেশে হামলা করা হয়।

বায়রা বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের নিরীক্ষিত হিসাব এবং বাজেট প্রস্তাব অনুমোদনের সময় দ্বিমতের কারণে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কয়েকজন সদস্য আসন্ন নির্বাচনের কারণে ব্যক্তিগত বিষয়ে বক্তব্য দিতে শুরু করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানিয়েছে, সভাপতি তাদের আলোচ্যসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকতে বললে, তারা পরিকল্পিতভাবে হৈ চৈ করে এজিএম থেকে বেরিয়ে যান।

তবে সংবাদ সম্মেলনে এজিএম বর্জনকারী নেতারা বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। বায়রার যুগ্ম মহাসচিব-১ ফখরুল ইসলাম দাবি করেন, কর্মী প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ বিষয়টি তুলে ধরায় এজিএমে বাধা দেওয়া হয়।

এছাড়াও আগের এজিএমে সিদ্ধান্ত ছিল, প্রত্যেক কর্মীর জন্য বায়রাকে এক হাজার টাকা করে দেবেন এজেন্সি মালিকরা। ছাড়পত্র পাওয়া ৪ লাখ ৯৪ হাজার কর্মীর জন্য, বায়রায় ৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা চাঁদা পাওয়ার কথা। এ হিসাব নেই। সিন্ডিকেট এ টাকাও লোপাট করেছে।

২০২২ সালে বাংলাদেশের চার এমপির প্রতিষ্ঠানসহ ২৫ এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর কাজ দেয় মালয়েশিয়া। যারা সিন্ডিকেট নামে পরিচিত পায়। পরে এতে যোগ হয় আরও ৭৫ বেসরকারি এজেন্সি।

সমকাল অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়া থাকা সিন্ডিকেটে নিয়ন্ত্রকদের কর্মী প্রতি ৬ হাজার রিঙ্গিত দিয়ে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র তথা ভিসা কিনে আনে। এর ফলে ভুয়া চাহিদাপত্র অর্থাৎ চাকরি না থাকার পরও কর্মী পাঠানো হয়। বাংলাদেশে কর্মী প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

গত ৩১ মে বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েও যেতে পারেননি ১৭ হাজার কর্মী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তদন্ত করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

কে কীভাবে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে নিয়েছে? প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনে বায়রা নেতা মোহাম্মদ জামিল হোসাইন বলেন, মাইগ্রামের জন্য তিন হাজার, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। এক লাখ সাত হাজার টাকা করে নিয়েছেন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক রুহুল আমিন স্বপন।

বাকিটা পেয়েছে, যে এজেন্সির লাইসেন্স ব্যবহার করে কর্মী পাঠাতে হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠান। তবে এগুলোর দালিলিক প্রমাণ নেই।

মঞ্জিল ওভারসিজের মালিক মুজিবুর রহমান মুজিব সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, সিন্ডিকেটে টাকা দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে তাঁর কাছে।

তিনি বলেন, রুহুল আমিন স্বপনের নিয়ন্ত্রিত দুটি এজেন্সির নামে কর্মী পাঠিয়েছেন। কর্মী প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যাংক রশিদ রয়েছে।

ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মালয়েশিয়ার মতো লিবিয়ার শ্রমবাজারেও সিন্ডিকেট হয়েছে। ২ হাজার ৩০০ এজেন্সির ৫০টি কর্মী পাঠানোর কাজ পেয়েছে। সৌদি আরব এবং আরব আমিরাতে শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট তৈরি চেষ্টা চলছে।

বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন তারাও কর্মী পাঠিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। সে সিন্ডিকেটে ঢোকার চেষ্টা করছিল।

শেয়ারনিউজ, ১২ জুন ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে