ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

মালয়েশিয়ার কথা বলে পাঠানো হতো কিরগিজস্তান, বাঁচার আকুতি তরুণদের

২০২৪ মে ২৬ ১১:৪৯:০৬
মালয়েশিয়ার কথা বলে পাঠানো হতো কিরগিজস্তান, বাঁচার আকুতি তরুণদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে যুবকদের কাছ থেকে টাকা নিতো চাঁদপুরের একটি দালাল চক্র। কিন্তু পাঠানো হতো কিরগিজস্তানে।

সেখানের নেওয়ার পর মালয়েশিয়া নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হতো। এরমধ্যে ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যেতো। তারপর খাওয়া-দাওয়া পড়তো তারা বিপাকে। খাওয়া-দাওয়া চাইলে মারধরের মুখে পড়তো যুবকরা।

তাদের মধ্যে এক ভুক্তোভোগী মোহাম্মদ শরীফ। বাড়ী চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর পাঁচানি গ্রামে। দেশে পোশাক কারখানায় চাকুরি করতো। সেই চাকরি ছেড়ে স্বচ্ছলতার আশায় বিদেশের পথে পা বাড়ান। বিদেশে রওনা হওয়ার পর মাত্র একদিন পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে তার। এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই।

পরে হঠাৎ এক ভিডিও বার্তায় বাঁচার আকুতি জানান মোহাম্মদ শরীফ। তিনি জানান, তার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা থাকলেও তাকে নেওয়া হয়েছে কিরগিজস্তানে। মোবাইলে ধারণকৃত এক ভিডিও বার্তায় জানান, কীভাবে দালালের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন তিনি।

মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘আমি দুই বছর অপেক্ষা কইরা কিরগিজস্তানে আইছি। দালালে আমারে কইছে মালয়েশিয়ায় পাঠাইবো। মালয়েশিয়ার নাম কইয়া এই কিরগিজস্তানে পাঠাইছে। কিরগিজস্তানে আইছি গার্মেন্টস ভিসায়। এখন গামেন্টর্স ভিসা না দিয়া স্ট্রবেরির খেতের কাজে। বৃষ্টি বাদল দিয়া এতো ঠান্ডা দিয়া আমি কাজ করি। কাজ করার পরে টাকা পাই না। টাকা চাইলে মারধর করে।’

মোহাম্মদ শরীফের পরিবার জানায়, তাকে বিদেশে পাঠাতে এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করার হয়েছে। এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন সবাই।

বাবা মো. হোসেন গাজী বলেন, ‘যেই দালালে নিছে টাকা পইসা খাইয়া হেই দালাল আমাগো লগে চিটিংবাজি করছে। এখন দালালের বন্দবোস্ত করে আমার ছেলেকে ফিরাইয়া দেক।’

মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমার ঘর নাই, কিছু নাই। তিন/চারটা পোলাপাইন। পুতে ব্রাকের থেকে চার লাখ টাকা কিস্তি তুলে, জিনিসপত্র বেইচা আর ঋণ কইরা গেছে। এখন ঋণওয়ালা বাড়ী এসে অপমান করে। আমার পোলারে দেশে আইনা দাও, নইলে মইরা যাইমু।’

তবে, মোহাম্মদ শরীফের ওপরই দোষ চাপিয়েছেন দালাল চক্রের সদস্য। অভিযোগ তুলেছেন চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ার।

দালাল চক্রের সদস্য আকতার হোসেন বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি ছিল, কিন্তু দেড় লাখ টাকা দিছে, কিরগিজস্তানে গিয়ে ভিসা রিনিউ করার কথা থাকলেও তারা রিনিউ করেনি, শরীফ এক বন্ধুর মাধ্যমে আমার কাছে আসছে, যে ট্রাভেলসের মাধ্যমে গেছে তাঁর অপরাধী, আমরা শুধু মাধ্যম।’

কিন্তু চুক্তিমতো টানা না দেওয়ার পর তাকে কিরগিজস্তানে কেন পাঠানো হলো-এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি দালাল চক্রের সদস্য আকতার হোসেন।

মোহাম্মদ শরিফের মতো আরো ১২ জন রয়েছেন এই বন্দিদশায়। গেল সপ্তাহে তারা একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে বাঁচার আকুতি জানান।

শেয়ারনিউজ, ২৬ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে