ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসায় প্রবেশপথ হবে বাংলাদেশ-তুরস্ক

২০২৪ মে ১৪ ০৫:৫৩:২১
ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসায় প্রবেশপথ হবে বাংলাদেশ-তুরস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ভৌগোলিকভাবে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যবর্তী দেশ হওয়ায় তুরস্ক যেমন দুই মহাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, হিমালয়ের কাছে অবস্থিত বাংলাদেশকেও আসিয়ান এবং সার্ক দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

বাংলাদেশ ও তুরস্ক উভয়ই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইউরোপ এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে।

সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশে সফররত তুরস্কের ফরেন ইকোনমিক রিলেশনস বোর্ড অব তুর্কিয়ে (ডিইআইকে) এবং তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আয়োজিত এক সভায় এই মন্তব্য করেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।

রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই আইকনে অনুষ্ঠিত এই সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির বাইরেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব দিন দিন জোরদার হচ্ছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ তুরস্কে ৪৯৫.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। দেশটি ৩৮০.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে পোশাক ও বস্ত্র, রাসায়নিক শিল্প, প্রকৌশল, নির্মাণ ও জ্বালানি খাতে ১৫ থেকে ২০টি তুর্কি কোম্পানি কাজ করছে। তুরস্কের শতাধিক কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের সেবা দিচ্ছে। এই কোম্পানিগুলি উত্পাদন, নির্মাণ এবং প্রকৌশলে নিজেদের দক্ষতা বিনিময়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বাণিজ্য বহুমুখীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

মাহবুবুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে। তুরস্কের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ওষুধ, পর্যটন, পাট, জ্বালানি, এবং প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে তুরস্ক।

ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন তুর্কি-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন হিদায়েত ওনুর ওজদেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার কাছে সেকেন্ড হোমের মতো। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার করার অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসায়ীক সম্পর্ক দিন দিন জোরদার হচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতাদের আগামীতে তুরস্ক সফরের আমন্ত্রণ জানান।

এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার হয়ে উঠব। তুরস্কের ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআই প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, এফবিসিসিআই পরিচালক, মহাসচিব মো. আলমগীর, ডিইআইকে এবং তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীরা।

শেয়ারনিউজ, ১৪ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে