ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

লোকসান থেকে মুনাফায় দুই কোম্পানি

২০২৪ জানুয়ারি ২৭ ১৭:২৮:৪৯
লোকসান থেকে মুনাফায় দুই কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২০টির বেশি কোম্পানি চলতি অর্থবছরের অর্ধবার্ষিকী অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এরমধ্যে দুটি কোম্পানি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বড় লোকসানে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ফিরেছে। যেগুলো হলো- বিবিএস কেবলস ও রানার অটোমোমোবাইলস। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবিএস কেবলস

২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিএস কেবলস তালিকাভুক্তির পর প্রতিবছরই বিনিয়োগকারীদের ভালো ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছিল। প্রথম বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ বোনাস মিলিয়ে মোট ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। পরের বছর ২০১৮ সালেও ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ বোনাস মিলিয়ে মোট ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

এরপর ২০১৯ সালে ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ বোনাস), ২০২০ সালে ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ বোনাস), ২০২১ সালে ১৫ শতাংশ (১০ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস) এবং ২০২২ সালে ১৩ শতাংশ (৮ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস) ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালে কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ায় ডিভিডেন্ড কমে গেছে ২ শতাংশে।

গত পাঁচ বছরের প্রাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ১৭ পয়সা, ২০২০ সালে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা, ২০২১ সালে ৪ টাকা ৮৪ পয়সা এবং ২০২২ সালে ৪ টাকা ১ পয়সা। ২০২৩ সালে ইপিএসে নেমে গেছে ৪৬ পয়সায়।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিক থেকেই কোম্পানিটি মুনাফা থেকে বড় লোকসানে চলে যায়। ওই বছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২৩) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ২ টাকা ৫৫ পয়সা।

এরপর চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৩) বিবিএস কেবলসের শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩২ পয়সা। যেখানে আগের বছর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১৪ পয়সা।

তবে অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২৩) কোম্পানিটি ফের মুনাফায় ফিরেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ১২ পয়সা। যেখানে আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ৯ পয়সা।

এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান ৩২ পয়সার বিপরীতে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মুনাফা হয়েছে ১২ পয়সা।

লোকসানের কারণ হিসাবে কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির কাঁচামালের মূল্য বেড়ে গিয়েছিল। বিপরীতে আগের থেকে বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তি থাকায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব হয়নি।

আর মুনাফায় ফেরার কারণ হিসাবে জানিয়েছে, বর্তমানে কাঁচামালের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া, নতুন পণ্যও উৎপাদন করা হচ্ছে।

গত দুই বছরের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ শেয়ারদর ছিল ৬২ টাকা ৫০ পয়সা। আর সর্বনিম্ন দর ছিল গত বৃহস্পতিবার ( ২৫ জানুয়ারি)। ওইদিন শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩৬ টাকা ৪০ পয়সায়।

কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা। ফ্লোর প্রাইস ওঠার পর এক সপ্তাহে কোম্পানিটির দর কমেছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ২৭ শতাংশের বেশি। মুনাফায় ইতিবাচক খবর আসার পরও কোম্পানিটির শেয়ার দামে উপর্যুপরি পতন দেখা গেছে।

রানার অটোমোবাইলস

২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রানার অটোমোবাইলস তালিকাভুক্তির বছরে ১৫ শতাংশ (১০ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এরপর ২০২০ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ, ২০২১ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং ২০২২ সালেও ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালে লোকসানের কারণে কোম্পানিটি কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৯ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৫ টাকা ৭ পয়সা, ২০২০ সালে ১ টাকা ৯৭ পয়সা, ২০২১ সালে ২ টাকা ৭০ পয়সা এবং ২০২২ সালে ২ টাকা ৪০ পয়সা। কিন্তু ২০২৩ সালে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে শেয়ার প্রতি ৭ টাকা ৭৫ পয়সা।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সাল থেকে কোম্পানিটি মুনাফা থেকে লোকসানে চলে যায়। ওই বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২২) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৮১ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২২) লোকসান হয় ২ টাকা ৮ পয়সা, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২৩) লোকসান হয় ১ টাকা ৪১ পয়সা এবং শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২৩) লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৪৪ পয়সা। অর্থাৎ ২০২৩ সালে শেয়ার প্রতি মোট লোকসান দাঁড়ায় ৭ টাকা ৭৫ পয়সায়।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৩) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান আরও বেড়ে যায়। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ২ টাকা ২৭ পয়সা। যেখানে আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৮১ পয়সা।

তবে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটি মুনাফায় ফিরেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২৩) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫ পয়সা। যেখানে আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২ টাকা ৮০ পয়সা।

তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ফিরলেও প্রথম প্রান্তিকের বড় লোকসানের কারণে দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২৩) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান রয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা।

লোকসানের কারণ হিসাবে কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির গাড়ীল মূল্য বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ানো যায়নি।

আর মুনাফা ফেরা প্রসঙ্গে কোম্পানিটি জানিয়েছে, থ্রি হুইলার ব্যবসায় মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরেছে কোম্পানিটি। এছাড়া, উৎপাদন মূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে গাড়ীর দামও বাড়ানো হচ্ছে।

শেয়ারবাজারে আসার পর রানার অটোমোবাইলসের শেয়ার ১২০ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। গত দুই বছরের মধ্যে বেশিরভাগ সময় কোম্পানিটির শেয়ার ৬০ টাকার ঘরে লেনদেন হয়েছে।

শেয়ারটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৮ টাকা ৪০ পয়সা। ফ্লোর প্রাইস ওঠার পর এক সপ্তাহে কোম্পানিটির দর কমেছে ১২ টাকা বা ২৫ শতাংশ।এরমধ্যে মুনাফায় ইতিবাচক খবর আসার পরও কোম্পানিটির শেয়ার দামে পতন হয়েছে।

হোয়াটস অ্যাপে শেয়ার কারসাজি, দায়ীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি

শেয়ারনিউজ, ২৭ জানুয়ারি ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে