ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

নিউইয়র্কে তিন নারীসহ ছয় বাংলাদেশি কারাগারে

২০২৪ জানুয়ারি ১৮ ২২:১৬:১১
নিউইয়র্কে তিন নারীসহ ছয় বাংলাদেশি কারাগারে

পরবাস ডেস্ক : নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকায় দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে মারধর ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

পৃথক দুই ঘটনায় অভিযোগকারী দুই ব্যক্তি ও অভিযুক্ত ছয় জনের সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে কথিত ‘অপহরণ’-এর ঘটনা সম্ভবত এটাই প্রথম। ঘটনা দুটি ঘটেছে ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ সোমবার এবং একই বছরের ১১ মে রোববার। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি বুধবার আদালত ছয় বাংলাদেশিকে অভিযুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠিয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন- সৈয়দ রুবেল আহমেদ (৪৩), শাহেদ আলম (২৯), আবু চৌধুরী (২৮), আনজু খান (২৮), সুলতানা রাজিয়া (৩৮) ও ইফফাত লুবনা (২৪)। তাদের মধ্যে আবু চৌধুরী ও লুবনা স্বামী-স্ত্রী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এক ব্যক্তিকে অপহরণ ও অপহরণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে এই ছয়জনের বিরুদ্ধে। এছাড়া আবু চৌধুরী ও তার স্ত্রী লুবনার বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি অপহরণের অভিযোগ রয়েছে।

ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্কের রাষ্ট্রীয় কৌসুলি ব্রেয়ন পিস বলেছেন, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ অভিযুক্ত রুবেল আহমেদ, শাহেদ আলম, আবু চৌধুরী, আনজু খান ও সুলতানা রাজিয়া অপর এক বাংলাদেশি ব্যক্তিকে জ্যামাইকার হিলসাইড অ্যাভিনিউর ১৮১ স্ট্রিটের কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি হোন্ডা এসইউভি গাড়িতে তুলে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেন।

এছাড়াও তারা তাকে বেদম মারধরও থাকেন। পরে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহৃত ব্যক্তিকে উলঙ্গ করে তা ক্যামেরায় ধারণ করে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র।

এই সময় অপহৃত ব্যক্তি পানি পান করতে চাইলে তাকে অপহরণকারীরা চেতনানাশক মিশ্রিত পানি পান করায়। এতে তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন। পরের দিন স্থানীয় একটি হাসপাতালে তার ঘুম ভাঙে।

গত ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ব্রুকলিন ফেডারেল কোর্টে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী সারাহ স্যাকস সুলতানা রাজিয়ার হয়ে শুনানি করেন। তিনি দাবি করেন, অপহৃত ওই ব্যক্তির হাতে তার মক্কেল গেলো ৫ বছর ধরে হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন।

আর সে কারণে আত্মরক্ষায় সুলতানা রাজিয়া এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেই যুক্তি তুলে ধরেন আইনজীবী। তার দাবি, অপহৃত ব্যক্তি রাজিয়ার চুল ধরে টানছিলেন। তিনি আত্মরক্ষা করতে চেষ্টা করছিলেন।

এদিকে, আরেক ঘটনায় ২০২৩ সালের ১১ মে রোববার আবু চৌধুরী ও লুবনা নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডের ব্রডওয়ে অ্যাভিনিউর ৭২ স্ট্রিটের কাছে অপর এক বাংলাদেশিকে অপহরণ করেন।

এই সময় অপহৃত আবু চৌধুরী জোর করে অপহৃতকে একটি মিনিভ্যানে তুলে নেন এবং তাকে পেটাতে শুরু করেন। পরে তারা অপহৃতকে একটি হোটেলে নিয়ে যান এবং আবু চৌধুরী তার সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করেন এবং অপহৃত ব্যক্তির বাবার কাছে ফোন করে আবু চৌধুরী ২০ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করেন বলেও আদালতের নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

অপহরণের তিন দিন পর আবু চৌধুরী তাকে চোখ বেঁধে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ফেলে রেখে যান বলেও প্রমাণ পেয়েছেন প্রসিকিউটররা। পরে অপহৃত ব্যক্তি তার চোখ খুলে একটি জানালা দিয়ে বাইরে আসেন এবং প্রতিবেশীদের সহায়তায় ৯১১-এ কল করেন।

অভিযুক্ত রুবেল আহমেদ, শাহেদ আলম, আনজু খান ও সুলতানা রাজিয়াকে ১০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার আটক করা হয়। আর আবু চৌধুরী ও লুবনাকে আগেই আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আরো একজন পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, এফবিআই ও নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ডিটেকটিভ শাখার অফিসারদের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট ভায়োলেন্ট টাস্ক ফোর্স’ দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে রিপোর্ট প্রদানের পরই আদালত রায় প্রদান করেন।

শেয়ারনিউজ, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে