ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

শেয়ারবাজারের পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

২০২৪ জানুয়ারি ১৭ ০৮:১০:৫১
শেয়ারবাজারের পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘বিশেষ ধার’ নিয়ে বছর শেষের চলতি হিসাব ইতিবাচক দেখিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

তবে ধারের মেয়াদ শেষ হতেই এসব ব্যাংক আবার পড়েছে ঘাটতিতে। শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো হলো– ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন।

গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলো প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিতে ছিল। এর মধ্যে বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ (সিআরআর) বাবদ ঘাটতি ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

চলতি হিসাবে ঘাটতি মেটাতে না পারলে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে এসব ব্যাংকের লেনদেন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, এসব ব্যাংকের লেনদেন বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এর পর পাঁচ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন ভালো দেখাতে বছরের শেষ কর্মদিবস ২৮ ডিসেম্বর কোনো উপকরণ ছাড়াই ‘বিশেষ ধার’ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পাঁচ ইসলামীসহ মোট ৯টি ব্যাংককে ওই দিন দেওয়া হয় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ সালের শেষ কর্মদিবসেও পাঁচ ইসলামী ব্যাংককে ‘লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট’ হিসেবে ১৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, নানা অনিয়মের কারণে ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে এসব ব্যাংকে চরম তারল্য সংকট দেখা দেয়। দিন দিন এই সংকট তীব্র হলেও ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। অনেক দিন ধরে বিধিবদ্ধ নগদ জমা (সিআরআর) এবং বিধিবদ্ধ তারল্য (এসএলআর) সংরক্ষণ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো।

কোম্পানিগুলোর জরিমানার টাকা দেওয়ার মতো অবস্থাও নেই। অন্য ব্যাংক থেকে ধারদেনা করতে হলে বিভিন্ন উপকরণ লাগে। তা না থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ‘বিশেষ ধার’ এবং চলতি হিসাব নেতিবাচক নিয়েই চলছে পাঁচ ইসলামী ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি থাকলেও অন্য ব্যাংকের সঙ্গে এসব ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ করা হয়নি। তবে ঘাটতি কিছুটা সমন্বয় করেছিল। ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ অবস্থা জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কাজ চলছে।

কোন ব্যাংকের ঘাটতি কতবাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মোট ঘাটতি ছিল ৯ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি হিসাবে নেতিবাচক ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা এবং সিআরআর বাবদ ৬ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। গত ১ জানুয়ারি ব্যাংকটির ঘাটতি ছিল ৫ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা।

গত বৃহস্পতিবার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোট ২ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা ঘাটতির মধ্যে ১ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা ছিল চলতি হিসাব নেতিবাচক। বাকি ১ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা সিআরআর বাবদ। গত ১ জানুয়ারি ব্যাংকটির মোট ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা।

ইউনিয়ন ব্যাংকে মোট ১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ঘাটতির মধ্যে ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা চলতি হিসাব নেতিবাচক এবং ৭৪৬ কোটি টাকা সিআরআর বাবদ ঘাটতি। গত ১ জানুয়ারি মোট ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের মোট ৫২১ কোটি টাকা ঘাটতির মধ্যে ৪৮৩ কোটি টাকা সিআরআর ও ৩৮ কোটি টাকা চলতি হিসাব নেতিবাচক। গত ১ জানুয়ারি ব্যাংকটির মোট ঘাটতি ছিল ৪৩০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত হয় ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে। আর্থিক প্রতিবেদনে যেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি, সিআরআর ঘাটতিসহ বিভিন্ন খারাপ অবস্থার প্রতিফলন দেখাতে না হয়, সে জন্য এ উপায়ে ধার দেওয়া হয়েছে। এভাবে ঘাটতি সমন্বয়ের সুযোগ না দিলে ব্যাংকগুলোর এলসি কনফারমেশন চার্জসহ সব ধরনের খরচ আরও বাড়বে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন অবস্থা হলেও একসময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ অন্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত ধার দিত।

কদর কমেছে ঝুঁকিপূর্ণ ৭ কোম্পানির

শেয়ারনিউজ, ১৭ জানুয়ারি ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে