ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বেসিক ব্যাংকের ঋণ আদায়ে

তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির উদ্যোক্তাদের বন্ধকী শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ

২০২৪ জানুয়ারি ০৩ ০৭:৩৯:৫৩
তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির উদ্যোক্তাদের বন্ধকী শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে চায় রাষ্টায়াত্ব কোম্পানি বেসিক ব্যাংক লিমিটেড। এজন্য কোম্পানি দুটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ব্যাংকটির বিও অ্য্যাকাউন্টে স্থানান্ত করতে চায়।

কোম্পানি দুটি হলো- তাল্লু গ্রুপের বঙ্গজ লিমিটেড ও মিথুন নিটিং ইন্ডাষ্ট্রিজ।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গজ লিমিটেড ও মিঠুন নিটিংয়ের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাদের স্পন্সর শেয়ার বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখায় জামানত রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। উভয় কোম্পানিরই একই উদ্যোক্তা-পরিচালক।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বঙ্গজ লিমিটেডে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার রয়েছে ৩০.৯৯ শতাংশ এবং মিথুন নিটিংয়ে রয়েছে ১৭.২০ শতাংশ। এর মধ্যে কত শতাংশ শেয়ার ঋণের জন্য বন্ধক রাখা হয়েছে, তা ব্যাংকটি জানায়নি।

তবে মিঠুন নিটিং-এর একজন কর্মকর্তা জানান, বেসিক ব্যাংক থেকে মিথুন নিটিংয়ের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাদের শেয়ারের একটি অংশ বন্ধক রেখে ৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।

বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ঋণের পরিমাণ এখন প্রায় ৫ কোটি টাকা।

গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে বেসিক ব্যাংক তার বিও অ্যাকাউন্টে লিয়েনকৃত শেয়ার স্থানান্তর করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসই-কে চিঠি দিয়েছে।

চিঠিতে, কোম্পানি দুটির বন্ধকী শেয়ার ব্যাংকের বিও অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করার অনুরোধ করেছে এবং সেজন্য ব্যাংকটি বিও অ্যাকাউন্টের তথ্য পাঠিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ব্যাংক এখনো এই বিষয়ে কোনো আপডেট পায়নি। যার ফলে ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে।

এর আগে ২০২৩ সালে বিএসইসি মিঠুন নিটিং এবং বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছিল।

কমিশন এমন একজন আগ্রহী উদ্যোক্তা খোঁজার ওপর জোর দিয়েছে, যিনি ব্যাংকে ঋণের বিপরীতে শেয়ার হস্তান্তর না করে মিঠুন নিটিংকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনবেন।

সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন বিএসইসির পরিচালক শেয়ারনিউজকে বলেন, মিঠুন নিটিং-এর বেশিরভাগ শেয়ার এখন সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে এবং অল্প সংখ্যক শেয়ার মালিকদের হাতে।

তিনি বলেণ, ব্যাংক যদি এখন বন্ধক রাখা শেয়ার নিয়ে নেয়, মালিকদের কিছুই থাকবে না। এই কারণেই আমরা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে কোম্পানিটিকে একজন বিনিয়োগকারী খুঁজতে এবং ঋণ নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দিয়েছি।

তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্পন্সর-পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু তা প্রতিপালন করতে ব্যর্থ হন মিঠুন নিটিং।

মিথুন নিটিং-এর কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ সোহেল রানা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকের সাথে এই ঋণ নিয়ে জটিলতা রয়েছে। ব্যাংক বন্ধক রাখা শেয়ার নিজের নামে নিতে চেয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, গত বছর আমাদের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল, যখন ব্যাংকটি তার নামে শেয়ার নেওয়ার জন্য কমিশনে আবেদন করেছিল। কমিশন ব্যাংকের নামে শেয়ার স্থানান্তর না করার বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছে।

মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড তার নাম পরিবর্তন করে টয়ো নিটেক্স (সিইপিজেড) লিমিটেড করেছে। কোম্পানিটি সেপ্টেম্বর ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।

মিঠুন নিটিং এর কারখানা ছিল চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড)। কোম্পানিটি ২০২২-২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, কোম্পানির ইজারা, ভাড়া এবং অন্যান্য জন্য চট্টগ্রাম ইপিজেড এর কাছে ১০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। অর্থ প্রদানের ব্যর্থতার কারণে চট্টগ্রাম ইপিজেড কোম্পানিটির সম্পদ দখল করে নিয়েছে এবং ইজারা চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে।

মিথুন নিটিং ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার ১৫ টাকা ৬০ পয়সায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।

শেয়ারনিউজ, ০৩ জানুয়ারি ২০২৪

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে