ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

উচ্চ প্রিমিয়াম কোম্পানির ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগকারীদের হতাশা

২০২৩ ডিসেম্বর ০৫ ১৭:০৭:৩০
উচ্চ প্রিমিয়াম কোম্পানির ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগকারীদের হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বড় স্বপ্ন দেখিয়ে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রতিটি শেয়ার ৭৫ টাকা করে ইস্যু করেছিল রানার অটোমোবাইলস। এমন উচ্চ ইস্যু মূল্যের কোম্পানিটির পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের জন্য কোন ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি রেকর্ড পরিমাণ লোকসান দেখিয়েছে। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭ টাকা ৭৫ পয়সা।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বুক বিল্ডিংয়ে আসা কোম্পানিগুলো কাট-অফ প্রাইস অতিমূল্যায়িত করার জন্য ইস্যু ম্যানেজারের মদদ রয়েছে। তাদের সহযোগিতায়ই কোম্পানিগুলো কাট-অফ প্রাইসে কারসাজি করেছে।

এছাড়া, শেয়ারবাজারে আসার আগে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে মুনাফা দেখানোর অভিযোগ আরও পুরোনো। এর মাধ্যমে অনেক কোম্পানি উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে শেয়ারবাজার থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যাতে করে তালিকাভুক্তির পরে শেয়ারহোল্ডারদেরকে দিতে পারছে না কাংখিত ডিভিডেন্ড। কমে এসেছে মুনাফার পরিমাণ। একইসঙ্গে অর্ধেক কোম্পানির শেয়ারদর কাট-অফ প্রাইসের নিচে চলে এসেছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলস চালুর পরে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ১৬টি কোম্পানি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে প্রিমিয়ামে অর্থ সংগ্রহ করেছে। ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫টি (এনার্জিপ্যাক এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি) কাট-অফ প্রাইসের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ৩.৮৭ শতাংশ করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তবে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন ও ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজকে বাদ দিলে এই ডিভিডেন্ডের হার আরও অনেক কমে যাবে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রিমিয়াম নেওয়া কোম্পানি থেকেও যদি বিনিয়োগকারীরা অভিহিত মূল্যের কোম্পানির মতো ডিভিডেন্ড পায়, তাহলে বুক বিল্ডিংয়ে আসার যৌক্তিকতা কোথায়? যদি প্রিমিয়ামের বিপরীতে রিটার্ন নাই আসে, তাহলে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যের কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দেওয়াই শ্রেয়।

গত ৮ বছরে বুক বিল্ডিংয়ে ১৬টি কোম্পানি ব্যবসায়িক পারফরমেন্স ভালো দেখিয়ে উচ্চ প্রিমিয়াম নিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছে। ওই কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে গড়ে ৬৮.২৭ টাকা (এনার্জিপ্যাক ছাড়া) করে প্রতিটি শেয়ার ইস্যু করেছে। এর বিপরীতে কোম্পানিগুলো গড়ে শেয়ারপ্রতি ৩ টাকা ৬৭ পয়সা বা ৩.৮৭ শতাংশ হারে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

২০১৫ সালের পাবলিক ইস্যু রুলসের অধীনে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রিমিয়ামে শেয়ারবাজারে আসা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রানার অটোমোবাইলসের কাট-অফ প্রাইস ছিল ৭৫ টাকা, কিন্তু কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। এভাবে বসুন্ধরা পেপার ৮০ টাকার বিপরীতে ১ টাকা ১০ পয়সা, বারাকা পতেঙ্গা ৩২ টাকার বিপরীতে ৫০ পয়সা, জেএমআই হসপিটাল ২৫ টাকার বিপরীতে ৫০ পয়সা, মীর আখতার হোসেন ৬০ টাকার বিপরীতে ১ টাকা ২৫ পয়সা, এস্কয়ার নিট ৪৫ টাকার বিপরীতে ১ টাকা, আমান কটন ৪০ টাকার বিপরীতে ১ টাকা, আমরা নেটওয়ার্ক ৩৯ টাকার বিপরীতে ১ টাকা ১০ পয়সা, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ৬২ টাকার বিপরীতে ২ টাকা, নাভানা ফার্মা ৩৪ টাকার বিপরীতে ১ টাকা ৩০ পয়সা, একমি ল্যাব ৮৫ টাকা ২০ পয়সার বিপরীতে ৩ টাকা ৩০ পয়সা, এডিএন টেলিকম ৩০ টাকার বিপরীতে ১ টাকা ৫০ পয়সা, লুব-রেফ বাংলাদেশ ৩০ টাকায় ২ টাকা, ওয়ালটন হাই-টেক ৩১৫ টাকায় ৩০ টাকা এবং ইউনাইটেড পাওয়ার ৭২ টাকায় ৮ টাকা ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

শেয়ারনিউজ, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে