ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

সপ্তাহের আলোচনায় তিন কোম্পানির শেয়ার

২০২৩ আগস্ট ২৬ ১৭:৩৯:২৩
সপ্তাহের আলোচনায় তিন কোম্পানির শেয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহজুড়ে (২০-২৪ আগস্ট) বিনিয়োগকারীদের আলোচনায় ছিল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির শেয়ার। বিভিন্ন কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিনিয়োগকারীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান পেয়েছে। কোম্পানি ৩টি হলো-মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজ, অ্যারামিট সিমেন্ট এবং এসকে ট্রিমস লিমিটেড।

মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজ

মালিকানা পরিবর্তন ও উৎপাদনে ফেরার খবরে মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজের শেয়ার গত ১৭ আগস্ট থেকে বাড়তে শুরু করে। যদিও মালিকানা পরিবর্তন ও উৎপাদনে ফেরার খবর স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে কোম্পানিটি ২১ আগস্ট। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ১৭ আগস্ট শেয়ারটির দর ছিল ২৮ টাকা ৮০ পয়সা। যা ২১ আগস্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৪০ পয়সায়। তারপর শেয়ারটির দর আরও বেড়ে সর্বশেষ ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দাঁড়ায় ৪২ টাকা ৭০ পয়সায়। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসই) খবরের আগে-পরে মিলিয়ে শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা বা ৪৮.২৬ শতাংশের বেশি।

গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ ৪৩ টাকা ৬০ পয়সা ও সর্বনিন্ম ২৪ টাকা ১০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে। তবে গেল সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার বছরের সর্বোচ্চ দরের উচ্চতা স্পর্শ করেছে।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, পিএসআই আসার আগেই শেয়ারটির দর অনেক বেড়েছে। পিএসআই আসার পরও বেড়েছে। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, শেয়ারটিতে ইন-সাইডার ট্রেডিং হয়েছে। যেখানে কোম্পানির লোকজন জড়িত ছিল।

আরিফুর রহমান নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, গত ৪-৫ বছর আগে সুহ্নদ ইন্ডাষ্ট্রিজেরও ঢাকডোল পিটিয়ে মালিকানা পরিবর্তন হয় এবং বন্ধ কারখানায় উৎপাদনের সোরগোল শুরু হয়। কোম্পানিটির নতুন মালিকরা বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে অনেক গলাবাজিও করেছিলেন। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে মডেল হবে। এক বছরের মাথায় ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ডও দিয়েছিল। কিন্তু সেই ডিভিডেন্ডের মুখ আর বিনিয়োগকারীরা দেখেনি। বিএসইসি কোম্পানিটির বিরুদ্ধে নানা আইনি পদক্ষেপও নিয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। এখন কোম্পানির উৎপাদনও বন্ধ। গলাবাজি করা মালিকরাও লাপাত্তা।

মনসুর আহমেদ নামের এক প্রবীণ বিনিয়োগকারী বলেন, ২০২০ সাল থেকে মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজের উৎপাদন বন্ধ। তখন কোম্পানিটির লোকসান ছিল শেয়ারপ্রতি ৩ টাকা ৬২ পয়সা। ডিএসইর প্রোপাইলে ২০২০ সালে কোম্পানিটির ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এরপর আর কোনো তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানায়নি। গত আড়াই বছরে কোম্পানিটির লোকসান অবশ্যই আরও বেড়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, মালিকানা পরিবর্তন ও উৎপাদনে ফেরানোর ঘোষণা দিয়ে কোম্পানিটির লোকজন ও কিছু বিনিয়োগকারী ফায়দা লুটে নিচ্ছে। কাজের কাজ হয়তো কিছুই হবে না। হলেও বিনিয়োগকারীদের অন্তুত ২-৩ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এরমধ্যে শেয়ারের দর সুহ্নদের মতো যেখানে ছিল, তার চেয়ে হয়তো আরও নিচে নেমে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বা বিদেশি কোনো বিনিয়োগ নেই। উদ্যোক্তা পরিচালকদের রয়েছে ৩০ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদর কাছে বাকি ৭০ শতাংশ।

এসকে ট্রিমস

গত ১৬ আগস্ট এসকে ট্রিমসের দর ছিল ২৪ টাকা ৯০ পয়সা। কোনো কারণ ছাড়াই সর্বশেষ ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৩০ পয়সায়। এ সময়ে দর বেড়েছে ৪ টাকা ৪০ পয়সা বা ১৫ শতাংশের বেশি।

সর্বশেষ ২০২২ সালে কোম্পানিটি ৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ওই বছর মুনাফা হয়েছিল শেয়ারপ্রতি ৯০ পয়সা। কোম্পানিটি আগের বছর ২০২১ সালে ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ৫ শতাংশ ক্যাশ এবং মুনাফা হয়েছিল শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১৪ পয়সা।

আমজাদ হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ২০১০ সালে শেয়ার কারসাজির দন্ডিত এক ব্যক্তি শেয়ারটি ধরেছেন। তিনি বর্তমানে পর্তুগালের নাগরিক। পর্তুগালেই বেশিরভাগ সময় থাকেন। তবে শেয়ার কারসাজিতে এখনো তিনি সিদ্ধহস্ত। গত সপ্তাহে দেশে এসেছেন। এসেই শেয়ারটি নিয়ে টানাটানি করছেন।

তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি এর আগে বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার ৬৫ টাকার ওপরে তুলে বিনিয়োগকারীদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। তখন বাজারে গুজব রটিয়েছিলেন, শেয়ারটি ১০০ টাকার ওপরে যাবে। সেই বিডি ফাইন্যান্স এক বছর যাবত ৪১ টাকা ১০ পয়সায় ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ফ্লোর প্রাইস না থাকলে শেয়ারটি হয়তো ২৫-৩০ টাকায় নেমে যেত। এক শেয়ারেই বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত।

অ্যারামিট সিমেন্ট

গত ১৬ আগস্ট অ্যারামিট সিমেন্টের দর ছিল ২২ টাকা। কোনো কারণ ব্যতিরেকেই সর্বশেষ ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৮০ পয়সায়। এ সময়ে দর বেড়েছে ৬ টাকা ৮০ পয়সা বা প্রায় ৩১ শতাংশ।

সর্বশেষ ২০২২ সালে কোম্পানিটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। সমাপ্ত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ১১ টাকা ৬৬ পয়সা। অর্থাৎ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারে লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৬৬ পয়সা।

আবদুর রহিম নামের এক বিনিয়োগকারী শেয়ারনিউজকে জানান, কোম্পানিটির শেয়ারে আলোচিত এক বিনিয়োগকারী হাত দিয়েছে। যিনি শত শত বিনিয়োগকারীকে ইতোমধ্যে ফকির বানিয়ে দিয়েছেন। তার শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ঘুম হারাম হয়ে যাবে।

শেয়ারনিউজ, ২৬ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে