ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বিমা কোম্পানির সিইও হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না যুগ্ম-সচিবরা

২০২৩ আগস্ট ২০ ১৩:১৬:২৯
বিমা কোম্পানির সিইও হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না যুগ্ম-সচিবরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বশেষ যুগ্ম-সচিব ছিলেন বা যুগ্ন-সচিব পদমর্যাদায় কর্মরত ছিলেন, এমন কর্মকর্তাদের বিমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করার উদ্যোগ নিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেও বিমা কোম্পানির সিইও নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্ম অভিজ্ঞতার শর্ত কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ’ প্রবিধানমালা সংশোধনের খসড়া।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে তৈরি করা ওই খসড়ায় বিমা কোম্পানির সিইও হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্ম অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করার পাশাপাশি একজন সিইও কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে সরকার বা সরকারের অধীন অন্য কোনো খাতে সর্বশেষ কমপক্ষে যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার পদে কর্মরত ছিলেন, এমন ব্যক্তিদের বিমা কোম্পানির সিইও হওয়ার সুযোগ রেখে একটি খসড়া প্রবিধানমালা তৈরি করা হয়। এই নিয়ে বিমা খাতে ব্যাপক আলোচনা -সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ’ প্রবিধানমালার খসড়ায় নতুন করে সংশোধন আনা হয়েছে। এখন যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে সেখানে যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদায় কর্মরত ছিলেন- এমন ব্যক্তিদের বিমা কোম্পানির সিইও হওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি।

এখন বিমা কোম্পানির ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২’ এর সংশোধনীর যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে তাতে বিমা কোম্পানির সিইও’র শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা দ্বিতীয় শ্রেণির চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রির অধিকারী। আর গ্রেডিং পদ্ধতির ফলাফলের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে সমতাকরণ সার্টিফিকেট দাখিল করার শর্ত রাখা হয়েছে। তবে কোনো বিমা কোম্পানিতে সিইও হিসেবে কোনো ব্যক্তির নিয়োগের আগে কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন দেওয়া থাকলে তার ক্ষেত্রে উল্লেখিত শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য হবে।

আর কর্ম অভিজ্ঞতার বিষয়ে বলা হয়েছে, এর আগে কোনো বিমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বা এর অব্যবহিত নিম্নপদে কমপক্ষে দুই বছর কর্ম অভিজ্ঞতাসহ বিমা ব্যবসায় কমপক্ষে ১২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকবে হবে।

তবে কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) উপযুক্ত মনে করলে দুটি ক্ষেত্রে এই শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিইও পদে নিয়োগ অনুমোদন করতে পারবে। এর মধ্যে প্রথমটি হল- সরকার বা সরকারি কোনো দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কোনো বিমা কোম্পানিতে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিকানা সরকার বা সরকার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের থাকলে।

দ্বিতীয়টি হলো- আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত বহুজাতিক বিমা কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পদে কমপক্ষে ১০ বছরের বিমাবিষয়ক কাজে সরাসরি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে দেশের বিমা কোম্পানির সিইও নিয়োগ দেওয়া যাবে। এক্ষেত্রেও আইডিআরএ উপযুক্ত মনে করলে শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিইও নিয়োগ অনুমোদন করতে পারবে।

বর্তমানে কার্যকর থাকা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২ অনুযায়ী, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রিও গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ, স্নাতকের ফলাফলের বিষয়ে কোনো সীমা নির্ধারণ নেই। এমনকি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতার বিষয়েও কোনো বক্তব্য নেই।

এই প্রবিধানমালায় বিমা কোম্পানির সিইও’র শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে তিন বছরের স্নাতক ও এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি।

অপরদিকে কর্ম অভিজ্ঞতার শর্তে রাখা হয়েছে, একই শ্রেণির বিমা কোম্পানিতে ১৫ বছরে চাকরির অভিজ্ঞতাসহ সিইও অব্যবহিত নিম্নপদে তিন বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অর্থাৎ কোনো জীবন বিমা কোম্পানির সিইও হতে হলে জীবন বিমা কোম্পানিতেই কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

একইভাবে সাধারণ বিমা কোম্পানির সিইও হতে হলে সাধারণ বিমা কোম্পানিতেই কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে বিমাবিষয়ক উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের জন্য অভিজ্ঞতা শর্তসাপেক্ষে তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিথিল করার বিধান রাখা আছে। আর বয়সের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০ থেকে ৬৭ বছরের মধ্যে।

এদিকে বিমা কোম্পানির সিইও কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন সে বিষয়ে সংশোধিত খসড়া প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, মোট বেতন, মূলত বেতন, বাড়িভাড়া এবং অন্যান্যা ভাতা (ভবিষ্য তহবিল, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, বিমা, এক বা একাধিক ইনসেনটিভ বোনাস-এর পরিমাণ বা সীমা নির্দিষ্ট অঙ্কে উল্লেখ থাকতে হবে) সমন্বয়ে গঠিত হবে। এক বছরে মোট ইনসেনটিভ বোনাস ১০ লাখ টাকার বেশি হবে না।

শেয়ারনিউজ, ২০ আগস্ট ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে