ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সাংবাদিক হ'ত্যা-নি'পীড়ন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল টিআইবি

২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১৬:৩৪:১৬
সাংবাদিক হ'ত্যা-নি'পীড়ন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি বদলের প্রত্যাশা থাকলেও গত ১৬ মাসে দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর সহিংসতা, হয়রানি ও চাপের মাত্রা বরং আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে—এমন কঠোর চিত্র তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ৫ আগস্ট থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৭৬টি নথিভুক্ত ঘটনায় কমপক্ষে ১,০৭৩ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী হামলা, হুমকি, মামলা, কারাবন্দি, চাকরি হারানো কিংবা পরিবার-পরিজনের ওপর আক্রমণের মতো নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে মাইডাস ভবনে আয়োজিত ‘কর্তৃত্ববাদ পতন-পরবর্তী বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনায় প্রকাশিত প্রবন্ধে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জাফর সাদিক।

তিনি জানান, ২৫৯টি ঘটনায় ৪৫৯ সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন, ৮৯টি ঘটনায় ৯৯ জন হুমকি পেয়েছেন, ৩০ ঘটনায় ৭০ জনকে হয়রানি করা হয়েছে। ১৯টি ঘটনায় অন্তত ২৭ জনকে আটক করা হয়; পরিবার-পরিজনের ওপর হামলা বা সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে ৯ বার। এ সময়ের মধ্যে ৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৮৯ জনকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত বা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জাফর সাদিক বলেন, কর্তৃত্ববাদ পতনের পর গণমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে এমন প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে পুরোনো নেতিবাচক চর্চার অনেককিছুই রয়ে গেছে। বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশ ১৬ ধাপ এগোলেও “আশাবাদী হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বহু গণমাধ্যমে সম্পাদক, বার্তা প্রধান, নির্বাহী সম্পাদকসহ শীর্ষ পদে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। অন্তত ৮টি পত্রিকার সম্পাদক এবং ১১টি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে বরখাস্ত বা পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং দলীয় সংশ্লিষ্টতার ভিত্তিতে রদবদলের ঘটনার উল্লেখও উঠে আসে প্রবন্ধে।

তথ্যমতে, অন্তত ২৯টি গণমাধ্যমে শীর্ষ অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে এবং একটি অনলাইন পোর্টালের মালিকানাও বদল হয়েছে। অনেকক্ষেত্রে এসব পরিবর্তন অস্বচ্ছভাবে ঘটেছে বলে উল্লেখ করে টিআইবি।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে এ বছর নেক্সট টিভি ও লাইভ টিভি নামে দুইটি নতুন চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উঠে আসে। এগুলোর মালিকানা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর নেতাদের হাতে যাওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরে টিআইবি।

বন্ধ থাকা চ্যানেল ওয়ান পুনরায় চালু হয়েছে এবং দিগন্ত টিভি সম্প্রচারের প্রস্তুতিতে রয়েছে। ‘আমার দেশ’ পুনরায় প্রকাশ শুরু করেছে। স্টার টিভি সম্প্রচারের অপেক্ষায়। গ্রিন টিভি সাময়িক বন্ধ থাকলেও আবার সম্প্রচারে ফিরেছে।

দেশে বর্তমানে সংবাদপত্র ও সাময়িকী রয়েছে ৩,২৭০টি; টিভি চ্যানেল ৫০টির বেশি, যার মধ্যে ৩৪টি প্রচারমুখী। অনলাইন নিউজপোর্টাল ৪০৬টি এবং বেসরকারি এফএম রেডিও সম্প্রচারে রয়েছে ১৯টি।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে