ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় যোগ্যতার শর্ত শিথিল 

২০২৫ নভেম্বর ১৩ ০০:৩৮:৫৬
খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় যোগ্যতার শর্ত শিথিল 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের জন্য গঠিত ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল পরিচালনার যোগ্যতা শর্তে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের ২০ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি থাকলেও তারা এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। এতদিন ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি থাকলে প্রতিষ্ঠানটি অযোগ্য বিবেচিত হতো।

বুধবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, পুনঃঅর্থায়ন ও প্রাক-অর্থায়ন স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান হওয়ার ক্ষেত্রে শ্রেণিবিন্যাসিত ঋণ ও বিনিয়োগের সর্বোচ্চ হার এখন ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত সার্কুলারের আগের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।

অন্য এক নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, সরকারের অগ্রাধিকার খাত হিসেবে উদ্যোক্তাদের চাহিদা বিবেচনায় স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে তিন বছর মেয়াদি ২৫ হাজার কোটি টাকার স্কিমটি পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে।

এর আগে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে। সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে গঠিত এ তহবিলের নাম দেওয়া হয় ‘সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে ২ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করবে। গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদের হার নির্ধারিত হয়েছে ৭ শতাংশ।

প্রাথমিকভাবে স্কিমটির মেয়াদ তিন বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। তহবিলের আকার ২৫ হাজার কোটি টাকা হলেও প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়, নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারি (যেমন: নদী ভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মঙ্গা, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, কোভিড-১৯ ইত্যাদি) ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দিতে হবে।

এ ছাড়া, বিতরণ করা মোট ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসা খাতে প্রদান করতে হবে। এর মধ্যে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আগের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে যদি তাদের শ্রেণীকৃত ঋণ বা বিনিয়োগের হার ১০ শতাংশের নিচে থাকে এবং অন্তত তিন বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থাকে। নতুন নির্দেশনায় এই হার ২০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

গত বছরের আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর গোপন রাখা বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ পেতে শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, মাত্র এক বছরে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা বেড়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকায়। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, আর বেসরকারি খাতেও তা ১০ শতাংশের বেশি।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে